নানা দেশে নির্বাচন ও নানা ইস্যুতে অসচেতন জনগণকে প্রভাবিত করছে নানা ধরণের বানোয়াট তথ্য। বিভিন্ন দেশের মানুষের স্মার্টফোনে ফেসবুক,ইউটিউবসহ নানা সামাজিক মাধ্যমে এসব ছড়াচ্ছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করেছে।
‘ডিপ ফেক’ প্রযুক্তি নামের এই অপকৌশলে আক্রান্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজনীতিসহ নানা সেক্টর। কয়েক বছর আগে থেকে বিষয়টি ইন্টারনেট দুনিয়ায় ঘুরে বেড়ালেও ২০১৮ সালে ডিপ ফেক প্রযুক্তির বিষয়টি পুরোপুরি সামনে আসে। তবে রাজনীতিতে নয়, ডিপ ফেক প্রযুক্তির প্রথম বাজার ছিলে পর্নোগ্রাফির জগত। চেনা তারকার মুখটি কারিগরি কৌশলে জুড়ে দেয়া হয় পর্নো দৃশ্যে অভিনয় করা কোনো দেহের সঙ্গে। বোঝার উপায়ই থাকে না যে আসলে নগ্ন দেহটি সেই তারকার নয়।
সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজনীতি ও সামাজিক বিভিন্ন ইস্যুতে এর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে জনগণের আন্দোলন-দাবিতে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্টে ভূয়া ও উস্কানিমূলক সংবাদ ও তথ্যের ব্যবহার হয়েছে নানা প্রেক্ষাপট।
এ বছরের শেষ দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেই নির্বাচনের আগে ‘ডিপ ফেক’ প্রযুক্তির নানা ধরণের ব্যবহার হতে পারে বলে আমাদের শঙ্কা।
দেশের বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এসব ভূয়া ও উস্কানিমূলক চর্চাযুক্ত সাইবার ক্রাইম বন্ধে কাজ করে যাচ্ছে। তারপরও থেমে নেই এসব। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো তাদের নিজস্ব গ্লোবাল নীতিমালায় চলে এবং বাংলা ভাষাভাষীদের ব্যবহারিক রীতি তাদের কাছে অনেকটাই নতুন। সরকার ও দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রত্যক্ষ যোগাযোগে বিভিন্ন সময় সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো দেশের জন্য নানা ব্যবস্থা ও নতুন নতুন রীতি কার্যকর করেছে বলে নানা গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যা অবশ্যই ইতিবাচক।
প্রযুক্তি নির্ভর সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো যুগের চাহিদা। তথ্যের অবাধ প্রবাহ ও জনগণের কণ্ঠস্বর বিভিন্ন মহলে পৌঁছে দেবার এক অনন্য মাধ্যমও বটে। এই মাধ্যম ব্যবহার করে নানা ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে, যার সবচেয়ে বড় উদাহরণ ‘গণজাগরণ মঞ্চ’ গঠন ও তার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য একত্রিত আন্দোলন। সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করে এরকম আরো যুগান্তকারী অগ্রগতি আসতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের রাজনীতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ‘ডিপ ফেক’ প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ ও তথ্যের সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ে সচেতন হবে দেশের জনগণ, এই আমাদের আশাবাদ।