সবকিছুর পর রাজনীতিটাই মুখ্য। কোন রাজনৈতিক শক্তি রাষ্ট্র পরিচালনায় আর বিরোধীদল রাজপথে কীভাবে শক্তি প্রদর্শন করে বা করতে পারে তার উপরই যে স্থিতিশীলতা নির্ভর করে সেটা বাংলাদেশ দেখে এসেছে বছরের পর বছর। এদিক থেকে ব্যতিক্রমী এক বছর পেরিয়ে নতুন বছরে বাংলাদেশ। প্রশ্ন হচ্ছে, জঙ্গিবাদের মতো বৈশ্বিক সমস্যা বাংলাদেশকে কাঁপিয়ে দিলেও রাজনৈতিক অঙ্গনে স্থবির কিন্তু স্বস্তির এক বছর শেষে বাংলাদেশের জন্য কী নিয়ে আসছে ২০১৭? সে প্রশ্নের উত্তরের সঙ্গে অর্থনীতির ভবিষ্যতও জড়িত। অর্থনীতির জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যদি হয় বড় এক শর্ত তাহলে ২০১৬ সালে সেটা পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রায় এক শতাংশ বেড়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭। সামষ্টিক অর্থনীতিতে গতি এসেছে, বেড়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু সক্ষমতার বড় প্রমাণ হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি চোখে আঙুল দিয়ে অক্ষমতাকেও দেখিয়ে দিয়েছে। শুধু এক্ষেত্রে নয়, নতুন বছরে সামগ্রিকভাবেই অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর, দেশের অর্থনীতি যখন অনেকটাই বিদেশে জনশক্তি এবং গার্মেন্টসসহ রপ্তানির উপর নির্ভর করে তখন বিশ্বায়নের এ যুগে বৈশ্বিক ঘটনাপ্রবাহ নানাভাবে প্রভাব ফেলে দেশের অর্থনীতিতে। যুক্তরাষ্ট্রে দায়িত্ব নিতে যাওয়া ট্রাম্প প্রশাসন এবং বৈশ্বিক জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় তাই আঞ্চলিক সহযোগিতাকে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। এসব কিছু মিলে: ১. অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ, ২. অর্থনীতির চাকা গতিশীল রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং ৩. রপ্তানি খাত আরো বিকাশে কূটনৈতিক মুন্সিয়ানাই হবে বাংলাদেশের সফলতার সিঁড়ি। সেই সিঁড়ির ধাপগুলো পেরিয়ে যাওয়ার আশায় সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা। হ্যাপি নিউ ইয়ার।