Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

দোয়া ও মাহে রমজান

মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া তথা প্রার্থনা করা বান্দার দায়িত্ব ও কর্তব্য। দোয়া মানে প্রার্থনা করা, নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস আল্লাহর কাছ থেকে চেয়ে নেওয়া। দুনিয়ার প্রয়োজনে অন্যের কাছে গেলে ক্ষেত্র বিশেষ তিনি বিরক্ত হন। কখনো কখনো একাধিক বললে তা রাগের কারণ হয়ে যায়।

কিন্তু মহান আল্লাহর কাছে বান্দাহ যত প্রার্থনাই করুক, যত বারই করুক, আল্লাহ তাতে ভীষণ খুশি হন। বরং দোয়া না করলে তিনি অসন্তুষ্ট হয়ে যান। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমার বান্দাগণ আমার সম্পর্কে আপনার কাছে জানতে চাইলে আপনি বলে দিন, আমি তাদের কাছেই আছি। আমার কাছে প্রার্থনা করলে আমি তার ডাকে সাড়া দেই। তারাও যাতে আমার কাজে সাড়া দেয় এবং আমার উপর ঈমান স্থাপন করে। তাতে তারা হেদায়াত প্রাপ্ত হবে।’ অন্যত্রে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমাকে আহ্বান করো, আমি তোমাদের আহ্বানে সাড়া দেব।’

আসলে বান্দা যখন আল্লাহর সর্বোময় ক্ষমতা এবং তাঁর সার্বভৌমত্বের উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে, তখন সেই প্রভুর দরবারে তার সামগ্রিক প্রয়োজনে সে নিজেকে উপস্থাপন করবে, এটাই তো স্বাভাবিক। বিপদে-মুসিবতে তাকেই তো ডাকবে। সে কারণে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘তোমারা দোয়া করার ক্ষেত্রে অক্ষম বা অপারগ হয়ে যেওনা। কারণ দোয়া চলমান থাকলে কেউ ধ্বংস হয় না।’ তিনি আরও ইরশাদ করেন, ‘সমুদয় বিপদ মুসিবত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য একজন মুমিনের ঢাল হলো দোয়া।’

শুধু তা–ই নয়, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন, ‘দোয়া মুমিনের তাকদীর পরিবর্তন করে দেয়।’ আসলে এটা আল্লাহর বড় মেহেরবানী। মহান প্রভু আমাদের সংকটময় সময়ে সংকট থেকে উত্তরণের একটা কার্যকর সিলেবাস অনুশীলন করার ব্যবস্থাপনা প্রদান করেছেন। পবিত্র হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যাশা করে যে বিপদে তার দোয়া কবুল হোক, তবে সে যেন শান্তির সময়ে বেশি বেশি দোয়া করে।’ অন্য বর্ণনায় প্রিয় নবী সাল্লল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘মহান আল্লাহ এমন দয়াবান সম্মানিত যে, কোন বান্দা তার কাছে দুই হাত তুলে কিছু চাইলে তিনি ওই বান্দার হাতে কোনো মঙ্গল দান না করে তাকে খালি হাতে ফেরাতে আল্লাহর লজ্জা বোধ করেন।’

মূলত যারা আল্লাহর পছন্দের বান্দা, তারাই আল্লাহর দরবারে বেশি করে দোয়া করে। এটাও মহান প্রভুর পক্ষ থেকে অপার নেয়ামত। কারণ এই তাওফীক কজনেরই বা হয়। যে কারণেই পবিত্র হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে যার জন্য দোয়ার দরজা উম্মোক্ত করে দেয়া হয়েছে তার জন্য রহমতের দরজাগুলো খুলে রাখা হয়েছে।’ আর পবিত্র মাহে রমজান আল্লাহর দরবারে দোয়া করার পূন্যময় সময়। কারণ রোজাদারের দোয়া আল্লাহ কবুল করবেন মর্মে হাদিস শরীফে ঘোষণাও আছে। মহান আল্লাহ আমাদেরকে তাওফিক দান করুন।

লেখক: মুফতি আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল হক উপাধ্যক্ষ, কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া কামিল মাদরাসা

Exit mobile version