বাংলাদেশ এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামের ইতিবাচক উপস্থাপনায় জড়িয়ে আছে জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেস্কো)র নাম। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপনের বছরে বঙ্গবন্ধু’র জীবন দর্শনের আর্ন্তজাতিকীকরণ এবং বিশ্বময় ছড়িয়ে দেয়ার জন্য ইউনেস্কো প্রচলন করেছে ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ইন দ্যা ফ্লিড অব ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’ শীর্ষক পুরস্কার।
এর আগে ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক বাংলাদেশের ২১ ফেব্রুয়ারী মহান শহীদ দিবসকে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া ছাড়াও ২০১৭ সালে ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধু’র ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব ইতিহাসের ‘ঐতিহাসিক দলিল’ হিসেবে শুধু ঘোষণা নয়, স্বীকৃতি প্রদান ও করেছে। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিনের বিরাজমান দ্বন্দ্ব-সংঘাতের অবসান ১৯৯৭ সালে সম্পাদিত বিদ্রোহীদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি সম্পাদনে ও এতদাঞ্চলে শান্তির জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ইউনেস্কো কর্তৃক হুকে বোয়ানি শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। এটাও ছিল বাংলাদেশের একটি অর্জন ও আরেকটি আনন্দের সংবাদ।
একটা সময় ছিল, বিশ্বের বিভিন্ন মানুষের কাছে ‘বাংলাদেশ’ ছিল খুবই অপরিচিত একটি রাষ্ট্র। বন্যা-জলোচ্ছ্বাস ছাড়া নেতিবাচক কিছু বিষয়েই আসতো বাংলাদেশের নাম। সে প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন হয়েছে সময়ের পরিক্রমায়। বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তোরণ ঘটেছে। নানা সমস্যার পাশাপাশি অগ্রসরমান অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন সূচকের বিচারে বাংলাদেশ বহুদেশের চেয়ে এগিয়ে।
বঙ্গবন্ধুর নামে ইউনেস্কোর এই পুরস্কার পুরো বিশ্বের মানুষের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে সাহায্য করতে নতুন রূপে। এবছর জুলাই মাসে ঘোষণা হয়েছিল এই পুরস্কার প্রবর্তনের, আর সম্প্রতি ইউনেস্কো’র ৪১তম সাধারণ সভায় প্রথমবারের মত পুরস্কারটি দেয়া হয়েছে। সৃজনশীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে তরুণ উদ্যোক্তাদের এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় পুরস্কারটি পেয়েছে উগান্ডার কাম্পালার মোটিভ ক্রিয়েশন্স লিমিটেড। ১১ নভেম্বর প্যারিসে ইউনেস্কো সদরদপ্তরে প্রধান অতিথি হিসেবে এ পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু’র জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে তার জীবন দর্শনের আর্ন্তজাতিকীকরণ এবং বিশ্বময় ছড়িয়ে দেয়ার জন্য ইউনেস্কো পুরস্কার এ মূহুর্তে সবচেয়ে উপযোগী মাধ্যম হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। এই পুরস্কারের অর্থ প্রদান ও পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে বাংলাদেশ এক সক্ষমতার সাক্ষর রাখতে পারছে বলে আমরা মনে করি। বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে ইতিবাচক আকারে তুলে ধরার এইধরণের আয়োজন গর্বের, এই ধারা সামনের দিনগুলোতে অব্যাহত থাকবে বলে আমাদের আশাবাদ।