দেখতে দেখতেই চলে এসেছে সনাতন ধর্মেরে সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয়া দুর্গা পূজা। এসে গেছে জমজমাট আনন্দ আর ভক্তিরসে ভেজার ১০দিন। দুর্গা পূজা মূল আকর্ষণ হলো ষষ্ঠী থেকে দশমী।
এই সময় মণ্ডপে মণ্ডপে পূজা-অর্চনা আর দেবী দর্শন করে কাটান হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শিশু থেকে বৃদ্ধ কেউই বাদ যায় না এ আনন্দ থেকে।
সনাতন ধর্মমতে, মা দুর্গা আসে আবার চলেও যায়। তাই যে ক’টা দিন মাকে পাওয়া যায় সে ক‘টা দিন আপন রঙ্গে রাঙিয়ে তোলে সবাই। তাই ষষ্ঠী থেকে দশমীর দিন পর্যন্ত সাজ পোশাকের দিকে একটু বিশেষ নজর রাখে সবাই।
সাজটাও হওয়া চাই দিন ভেদে ভিন্ন। ষষ্ঠীর সাজের সঙ্গে যেন সপ্তমীর সাজ না মিলে। আর একারণেই ষষ্ঠী থেকে শুরু দশমীর সাজ হবে মা দুর্গার মতো ভিন্ন রূপে।
ষষ্ঠীর সাজ:
ষষ্ঠীর দিন অনেক কাজের ভেতর থেকে পূজা-অর্চনা করাই রীতি। তবে সকাল থেকেই এদিন মণ্ডপে মণ্ডপে ঘোরাটাও বেশ জোরেশোরে শুরু হয়। তাই সকালে বা দুপুরের দিকে যারা বের হবেন তারা শাড়ি পড়তে পারেন। এক্ষেত্রে তাঁত, কটন, জামদানী কিংবা মানানসই শাড়ি পছন্দ করতে পারেন।
এদিনের সাজটা ততটা গর্জিয়াস হয় না। চোখে হালকা শ্যাডোসহ চিকন লাইনার আর পছন্দসই রঙের লিপস্টিক পড়ুন। তরুণীরা লাইট এবং ন্যাচারাল সাজ যেমন ফতুয়া, ট্রেন্ডি টপস, জিন্স সঙ্গে দুই ফিতাওয়ালা চপ্পল মানানসই পড়তে পারেন।
সপ্তমীর সাজ:
দশমীর দিন ঘনিয়ে আসতে থাকা মানেই সাজের গর্জিয়াস ভাব আসতে থাকা। তাই সপ্তমীর সাজ একটু ভারি হতে পারে। এদিন তেমন আড়ম্বরপূর্ণ কোনো আয়োজন না থাকলেও এলাকার পূজা মণ্ডপ ঠিকই সরগরম থাকে। তাই এদিন যারা বের হবেন তাদের সাজে লিপস্টিক, শ্যাডো, মাসকারা, লাইনার সবই একটু ভারি হবে। পোশাকেও ষষ্ঠীর মত হালকা ভাব তবে শাড়িতে এদিন অনেকে কাতান, জর্জেট পড়তে পারেন।
অষ্টমীর সাজ:
অষ্টমীর সকালটা শুরু হয় অঞ্জলি অর্পণের মধ্য দিয়ে। পাড়ার মণ্ডপে কিংবা মন্দিরে গিয়ে এদিন দেবীকে পুষ্পার্ঘ্য দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে বাচ্চাদের আগ্রহটাই বেশি দেখা যায়। বাচ্চাদের জন্য একটু রঙিন ধাচের জামা হলেই এদিনের সাজে তাদের অন্য লুক দেওয়া যায়। এদিন বাঙালি বিবাহিত নারীরা কপালে মোটা করে সিঁদুর পরেন। চোখে কাজল টানেন। অষ্টমীর রাতে প্রায় সবাই ভারি সাজে সাজতে পছন্দ করেন। শাড়ি-গয়না-মেকআপ, সবক্ষেত্রেই থাকা চাই গর্জিয়াস লুক।
নবমীর সাজ:
নবমীতে হয় সন্ধ্যা পূজা। তাই সবাই সন্ধ্যার পরই মন্দিরে যান। আর সন্ধ্যার পর বলেই এদিন অনেকটা পার্টি সাজেই বের হয় সবাই। ভারি গয়না, রং-বৈচিত্র্যপূর্ণ পোশাক, ভারী মেকআপ, চুলের সাজ, তাজা ফুল এদিনের সাজের অনুষঙ্গ।
দশমীর সাজ:
শারদীয় পূজার প্রধানতম আকর্ষণ দশমী। দশমীর সাজ মানে লাল পেড়ে সাদা শাড়ি, হলুদ পেড়ে লাল শাড়ি কিংবা একদম লাল রঙা শাড়ি। প্রায় সব বয়সী নারীদের ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য। অনেকে আবার প্রতীমার মতোও সাজতে পছন্দ করেন। চোখে কাজলের টানা লাইনার, লাল লিপস্টিক, স্নিগ্ধ মেকআপ আর সিঁদুর। এদিন ঠাকুরকে সিঁদুর পরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নিজেরাও মেতে উঠেন সিঁদুর খেলায়।
সাজের ক্ষেত্রে মেয়েদের সাথে সাথে ছেলেরাও কিন্তু পিছিয়ে নেই। পূজার শুরুর দিন গুলোতে তারা হালকা রং এর পাঞ্জাবী ও পায়ে আরামদায়ক ফিতে যুক্ত স্যান্ডেল পরতে পারেন। আর শেষ দিন গুলোতে জমকালো পাঞ্জাবী, ফতুয়া পছন্দ করেন যারা একটু অন্যভাবে নিজেকে উপস্থাপন তারা ধুতি পরতে পারেন।
ছেলেরা চুলে জেল ব্যবহার করে এ দিন ভিন্ন লুক আনতে পারেন। বাজারে বিভিন্ন স্টাইলের আংটি ও ব্রেসলেট পাওয়া যায়, চাইলে হাতের জন্য পছন্দমতো ও মানানসই নিজের মতো করে বেছে নিতে পারেন।