সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার বেলতৈল ইউনিয়নের সর্ব উওরের গ্রাম আগনুকালী। চার হাজার লোকের বসবাসস্থল ছোট এই গ্রামটিকে মাত্র সাড়ে ৪ মাসের প্রচেষ্টাতে দুই যুবক বন্য পাখির অভ্যয়াশ্রমে পরিণত করেছে। এই দুই যুবকের নাম মামুন বিশ্বাস ও ইমন সরকার।
ছোট্ট একটি কাজে পুরো এলাকায় মুক্তভাবে বসবাস করা শুরু করেছে পাখিরা। তাদের এমন উদ্যেগের সঙ্গে একমত হয়ে গ্রামবাসীরাও এই কাজে বাড়িয়ে দিয়েছে সহযোগিতার হাত।
মামুন ও ইমন এ পর্যন্ত গ্রামের ৩৮৫ টি বৃক্ষে বিশেষভাবে তৈরি পাখির বাসযোগ্য ৩৮৫ টি মাটির কলস বেঁধে দিয়েছে। এখন আশপাশের লিছিমপুর, রায়পাড়া, সিকদার পাড়া, মধ্যপাড়া, ব্রাহ্মণবাড়ী, সাতবাড়ীয়া, ভেন্নাগাছি, লক্ষীপুরসহ ১০টি গ্রামকেও এর আওতায় এনে বৃক্ষে কলস লাগানোর কাজ চলছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী ৬ মাসের মধ্যে সেগুলিও বন্য পাখির অভ্য়াশ্রমে পরিণত হবে।
বাসযোগ্য বৃক্ষ নিধন, উপযুক্ত খাদ্য সংকট, ক্ষেতেখামারে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অপরিকল্পিত পাকা দালান কোঠা নিমাণ ও শিকারীর তান্ডবে এ অঞ্চলে দেশীয় প্রজাতির বন্য পাখির সংখ্যা হ্রাস নজরে আসে এই দুই যুবকের। তারপর তারা নিজ উদ্যোগে বন্য পাখির অভয়াশ্রম গড়ে তোলার ব্যতিক্রমী এ কার্যক্রম শুরু করে।
উদ্যোক্তা মামুন বিশ্বাস বলেন, এখন থেকেই বন্যপাখিদের প্রতি যত্নবান না হলে ভবিষ্যতে পরিবেশবান্ধব দেশীয় অনেক প্রজাতির পাখি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই আমাদের দেশ থেকে ৪১ প্রজাতির দেশীয় পাখি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এ সংগঠনের সদস্য ও কর্মী শাহীন, সুজন, নবী ও আজিজুল জানান, এ কাজে তারা এলাকাবাসীর ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন।
পাখিরাই আমাদের প্রকৃত বন্ধু। এরাই আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশকে বাঁচিয়ে রেখেছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ বেঁচে থাকলে আমরাও বেঁচে থাকবো। পৃথিবীও বেচে থাকবে র্দীঘ যুগ। এ ভাবনা থেকেই প্রথমে মামুন তার নিজ বাড়ির গাছে পাঁচটি কলস বাঁধেন। কিছুদিন যেতেই এসব কলসে আশ্রয় নেয় শালিক পাখি। এরপর শুরু হয় গ্রামে কলস লাগানোর কাজ।
এছাড়া গ্রামের বিভিন্নস্থানে জনসচেতনতামূলক পোষ্টার ও ব্যানার টানানো হয়। তবে সরকারি-বেসরকারি সংস্থার পৃষ্টপোষকতা পেলে শুধু গ্রাম নয় পুরো শাহজাদপুর উপজেলাকে পাখির অভ্য়াশ্রম গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন বলেই বিশ্বাস এই দুই উদ্যোক্তার।