যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং নানাবিধ কর্মসূচির মাধ্যমে তেহরানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ৫০তম মহান বিজয় দিবস পালন করেছে।
রাষ্ট্রদূত এএফএম গওসোল আযম সরকার জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যম দিবসটির অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়। দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। বিকালে ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
এছাড়াও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের এবং মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এবং দেশের শান্তি, নিরাপত্তা ও অগ্রগতির জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
ইরানে প্রথমবারের মত একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ইরান ডেইলিতে দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর বাণী প্রকাশিত হয়।
রাষ্ট্রদূত এএফএম গাউসুল আযম সরকারের সভাপতিত্বে এবং দূতালয় প্রধান মো. হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের পরিচালক আহমদ সাদেগি, ফার্সি ভাষায় বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর প্রকাশক মো. সাদেগ সামি, সিনিয়র সাংবাদিক মো. এজাজ হোসেন, রেডিও তেহরান বাংলা সার্ভিসের সাংবাদিক সোহেল আহমদ, দূতাবাসের কমার্সিয়াল কাউন্সেলর মো. সবুর হোসেনসহ তেহরান, শিরাজ, ইস্পাহান ও কোমে অধ্যয়নরত ছাত্রগণ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
বক্তাগণ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয় দিবসের তাৎপর্য এবং স্বাধীনতার ইতিহাস ও জাতির পিতার অবদান ও স্বপ্নের ওপর আলোকপাত করেন। এছাড়া সৈয়দ মুসা রেজা স্বরচিত ছড়া এবং আবৃত্তিকার নাসির মাহমুদ কবিতা পাঠ করেন।
রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের শহীদগণ, সম্ভ্রমহারা মা-বোন, এবং ত্যাগ স্বীকারকারী মুক্তিযোদ্ধাগণের প্রতি সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বিশেষ করে স্বাধীনতা অর্জনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন। বলেন, তার অবিসংবাদিত নেতৃত্বে এবং স্বাধীনতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলার আপামর জনগণ দীর্ঘ আন্দোলনের পরিক্রমায় ’৭১ এর সশস্ত্র সংগ্রামে নেমে অনেক ত্যাগ ও মূল্যের বিনিময়ে বিজয় অর্জন করে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মাত্র সাড়ে তিনবছরে স্বাধীনতা-উত্তর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন হয়, বাংলাদেশ বিশ্বের সাথে বন্ধুত্বমূলক সম্পর্কে সংযুক্ত হয় এবং অবকাঠামো ও সমাজ বিনির্মাণের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জিত হয়।
তিনি জাতির পিতার সংগ্রাম ও ত্যাগ, নেতৃত্ব, সোনার বাংলার স্বপ্ন এবং রাষ্ট্রপরিচালনায় এবং অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে তার রেখে যাওয়া নীতি, দর্শন ও দিকনির্দেশনার উপর তার এই জন্মশতবার্ষিকীর প্রেক্ষিতে বিশেষ আলোকপাত করেন।
তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে তার ঘোষিত রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ এর আওতায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে দেশ সেই লক্ষ্যে উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছে।
তিনি উপস্থিত সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে জাতির পিতার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে অবদান রাখার আহ্বান জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে বর্তমান পরিবর্তনশীল বিশ্বে বাংলাদেশ জাতির পিতা প্রদত্ত পররাষ্ট্রনীতি নীতি অনুসরণ করে বিশ্বের দরবারে মর্যাদার আসনে পৌঁছাবে।
ইরানে করোনার বিস্তৃতির প্রেক্ষাপটে এ বছর ভার্চুয়ালি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে ইরানের বিভিন্ন শহর থেকে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেন।
এ উপলক্ষে প্রেরিত বাণী ও প্রবন্ধসমূহ প্রকাশ এবং মুজিব কর্ণারে সংরক্ষণ ও ব্যবহারের জন্য দূতাবাস উদ্যোগ নিয়েছে।