‘আমাদের পাশ্ববর্তী ভবনও কয়েকদিন দেখি না’ বা ‘এমন তীব্র দূষণের চেয়ে মন্থর অর্থনীতিও ভালো’ এমন অভিযোগগুলো এখন জোড়ালো চীনে। কুয়াশা-ধোয়া ও প্রতিকূল আবহাওয়ায় দৃষ্টিসীমা নেমে এসেছে ৫০ মিটারেরও নিচে।
এমন অসহনীয় দূষণের ফলে দেশটিতে প্রথমবারের মতো জাতীয়ভাবে জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট। প্রতিকূল আবহাওয়ার বিরুদ্ধে অনবরত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া দেশটি বুধবার প্রথম এমন চরম সতর্কবার্তা ঘোষণা করে।
দেশটির ২০ টি শহরে এই রেড অ্যালার্ট কার্যকর করা হয়েছে। এর মানে মাত্র দুই ঘন্টার মাথায় দৃষ্টিসীমা নেমে আসতে পারে ৫০ মিটারে (১৬০ ফুট), পিউপিলস ডেইলি অনলাইন এমনটি জানায়। চালকদের সতর্কতার সাথে গাড়ি চালাতে বলা হয়েছে। বিমানবন্দর ও বন্দরগুলোতে চলাচল বাতিল করতে হচ্ছে।
বায়ু দূষণের নিরিখে চীনে চার মাত্রার সতর্ক সংকেতের মধ্যে রেড অ্যালার্ট সর্বোচ্চ। বেইজিং, তিয়ানজিন এবং হেবেই প্রদেশের অঞ্চলগুলোর অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। দূষণের হাত থেকে রক্ষা পেতে বেইজিং ইতিমধ্যেই পেট্রোলচালিত গাড়ি এবং নির্মাণ সামগ্রী বহনকারী ট্রাক চলাচল নিষিদ্ধ করেছে। এছাড়াও দেশটির ২১টি শহরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা সংকেত অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি রয়েছে।
চীনের উত্তরাংশ বেশ কয়েকদিন ধরেই দূষণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, সেখানে দূষণের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহনীয় মাত্রার চেয়ে নিচে চলে গিয়েছে অনেক আগেই। তবে চীনে দূষণ সংক্রান্ত ভাবনা কিন্তু খুব বেশি আগের নয়। মাত্র ২০১৩-তে দেশটির এই দূষণ সতর্ক ব্যবস্থা চালু করে বলে জানায় চিনের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মা জিজি।
দূষণের এক ভয়াবহ চিত্র দেখা যায় জানুয়ারির ৩ তারিখে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে, যেখানে মাত্র ২০ মিনিটের মাথায় রাজধানীতে ধোয়া ও কুয়াশায় দীগন্তের রূপটাই বদলে যায়।
হাজারো প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে দূষণ থেকে বাঁচতে। দেশটির পরিবেশ রক্ষা মন্ত্রণালয় জানুয়ারির ২ তারিখ ৫০০ টি উদ্যোক্তা ও নির্মাণাধীন সাইট বন্ধ করতে বলার পরও চালু রাখার জন্য।
অনেকেই সামাজিক মাধ্যম উইবোতে দূষণের অভিযোগ করেন। একজন ব্যবহারকারী লিখেন, অর্থনীতিতে মন্থরতাও ভালো, তবু তীব্র দূষণ চাই না।
শীতের সময়টা আবহাওয়া দূষণ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হয় দেশটিকে। গত বছরের নভেম্বর থেকেই উত্তরাংশে এমনটি দেখা যাচ্ছে। গত বছর জিনগাজি এবং শানজি প্রদেশে রেড এ্যালার্ট জারি করা হয়েছিলো।