অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেছেন, তরুণের রক্ত ব্যবসায়ীদের কাছে খুব প্রিয়, তাই এখন চারদিকে তারুণ্যের ফল্গুধারা। কিন্তু, ব্যবসায়ীরা নিজেদের স্বার্থে তরুণদের ব্যবহার করে, তাদের সব রক্ত শুষে নেয়, এরপর তাদের ছুঁড়ে ফেলে দেয়।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) সাহিত্য পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, অনেকে আবার মনে করেন তরুণরাই দেশের নেতৃত্ব দেবে, তরুণরাই সবকিছু পরিচালনা করবে। এ ধরনের চিন্তা ভুল।
বিভিন্ন উদাহরণ টেনে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বলেন, তরুণরা দেশকে এবং সমাজকে এগিয়ে নেবে ঠিক, কিন্তু প্রবীণদেরই নেতৃত্বে থাকতে হবে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, অভিজ্ঞতা ছাড়া সূচারু নেতৃত্ব সম্ভব নয়।
তবে, দেশে এখন আদর্শ প্রবীণও নেই মন্তব্য করে প্রবীণ এ অধ্যাপক বলেন, দেশে যে প্রবীণরা আছেন তারা নষ্ট । আর আদর্শবান যারা ছিলেন বা আছেন তাদের মৃত্যুর পর সে জায়গায় যেতে পারে এমন তরুণও দেশে নেই।
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন: আমাদের তরুণরা যে সামনে এগুবে সে পথটি কেউ তৈরি করছেন না। কারণ আগামীর পথ দেখানোর মানুষটি এখন আর খুব দেখা যায় না। যারা আছেন তারা শুধু বক্তৃতা করেন। বক্তৃতায় নয়, জীবনাচার দিয়ে তরুণদের উৎসাহিত করতে হয়।
সাংবাদিকতা ও সাহিত্যচর্চার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ঘটনার ভেতরে থাকে তথ্য। আর তথ্যের ভেতর থাকে সত্য। তথ্যকে আবিষ্কার করা সাংবাদিকের কাজ। আর সত্যকে আবিষ্কার করা সাহিত্যের কাজ।’
অনুষ্ঠানে তিনি কবি হাসান হাফিজের হাতে ডিআরইউ সাহিত্য পুরস্কার তুলে দেন। গত বইমেলায় প্রকাশিত ডিআরইউ সদস্যদের বইগুলো থেকে তাকে নির্বাচিত করে কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি জুরি বোর্ড। হাসান হাফিজ তার ‘অভিমান মৃত্যু ও পাথর’ কাব্যগ্রন্থের জন্য ডিআরইউ সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন। পুরস্কারের অর্থমূল্য ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া তাকে সম্মাননা স্মারক এবং সনদ দেওয়া হয়।
রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন কবি আসাদ চৌধুরী, কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, সাংবাদিক মাহবুব আলম, চ্যানেল আই অনলাইনের সম্পাদক জাহিদ নেওয়াজ খান, ডিআরইউ সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কাফি কামাল এবং সাংস্কৃতিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন: আমার দেখা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ডিআরইউ একটি ভিন্নধর্মী প্রতিষ্ঠান। এই সংগঠনের সদস্যদের ব্যক্তিগত নানা মতাদর্শ থাকলেও পেশাদারিত্বের প্রশ্নে, সংগঠনের প্রশ্নে সবাই এক। এ কারণেই এই সংগঠনের প্রতি মানুষের আস্থা আছে ও বিশ্বাস আছে।
কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, ‘আমার ভাবতে ভালো লাগছে যে, ডিআরইউ সাহিত্যে পুরস্কার দিচ্ছে। আমার বিশ্বাস, একদিন এই পুরস্কার একটি সম্মানজনক জায়গা তৈরি করবে।’