চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে হাইকোর্টে তলব

ধর্ষণ মামলার দুই আসামির একই সময়ে জবানবন্দি গ্রহন করায় বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে ঢাকা মহানগর হাকিম (মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট) মো. সারাফুজ্জামান আনছারীকে তলব করেছে হাইকোর্ট।

আগামী ১১ নভেম্বর এই মামলার কেস ডকেট নিয়ে তাকে হাইকোর্টে হাজির হতে বলা হয়েছে।

আজ মামলার এক আসামির জামিন শুনানিতে বিষয়টি নজরে আসলে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। আদালতে আসামির জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আব্দুল জলিল। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারোয়ার হোসেন বাপ্পি।

এর আগে গত বছরের ১৯ জুন এই মামলায় অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন। এরপর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হেমায়েত উদ্দিন আসামিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০৩ এর ৯ (৩) ধারায় অভিযোগ গঠন করেন। এরপর মামলার আসামি মো. কাউছার হাইকোর্ট থেকে এক বছরের জামিন পান। আর আসামি শাহাদাত ট্রাইব্যুনালে জামিন না পেয়ে হাইকোর্টে আপিল করে সে। আজ শাহাদাতের সে আপিলের শুনানিতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির প্রসঙ্গ আসে। এসময় আদালত জবানবন্দির বিষয়টি দেখেন সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে তলব করেন।

এই মামলার অভিযোগ পত্রে বলা হয়েছে, বন্ধু নবীরুল ইসলামের ফোন পেয়ে ২০১৮ সালের ১২ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টায় বাদি (ভিকটিম) তার বান্ধবিসহ কুড়িল বিশ্বরোডের বিসমিল্লাহ কারস লিমিটেডে গেলে রাত ৮টার দিকে তাদের একটি প্রাইভেটকারে তুলে নেয়। এরপর প্রাইভেটকারটি কুড়িল বিশ্বরোড হয়ে ৩০০ ফিট রাস্তার কিছুদূর যাওয়ার পর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এফ ব্লকে গিয়ে ১০০০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে বাদির বান্ধবিকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। সে সময় বাদি গাড়ি থেকে নামতে গেলে তাকে নামতে দেওয়া হয়নি। একপর্যায়ে ধর্ষণের পর বাদিকে প্রাইভেটকারে থাকা আসমিরা (নবীরুল, শাহাতাদ, ও কাউছার) খিলক্ষেত এলাকায় হোটেল রিজেন্সি সামনে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। গত বছর ১১ জানুয়ারি আসামী নবীরুল প্রাইভেটকারটি বিক্রি করে দিয়ে গা ঢাকা দেয়। এদিকে ধর্ষণের ঘটনার পরদিন ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর ভাটারা থানায় ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করেন বাদি।
দ্বিতীয় দফায় এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন হওয়ার পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর কাছে হস্তান্তর করা হয় মামলাটি। তদন্তকালে গত বছরের ২৭ মার্চ ঢাকার বাবুবাজার এলাকা থেকে আসামি শাহদাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তি ও তথ্যের ভিত্তিতে অপর দুই আসামি মো. নবীরুল ইসলাম ও মো. কাউছার ওরফে হৃদয়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর পরদিন বেলা ১২টায় ঢাকা মহানগর হাকিম (মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট) মো. সারাফুজ্জামানের খাস কামরায় শাহাদাত ইসলামের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। একই দিন একই সময় আসামি মো. কাউছারের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও রেকর্ড করেন মহানগর হাকিম (মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট) মো. সারাফুজ্জামান। তবে একই দিন একই সময়ে দুই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার বিষয়টি নজরে আসলে হাইকোর্ট সংশ্লিষ্ট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে তলব করেন।

এদিকে বাদি থানায় ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করলেও তদন্ত পরবর্তী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির প্রেক্ষিতে আসামিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।