দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর পরে বহুল আলোচিত প্রতিষ্ঠান ডেসটিনি গ্রুপের শীর্ষ কয়েক ব্যক্তিসহ ৪৬ আসামীকে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। প্রতিষ্ঠানটির তৎকালীন শীর্ষ কর্মকর্তাদের প্রায় সবাই দণ্ডিত হয়েছেন।
‘ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি’ এবং ‘ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেড’ এর নামে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৪ হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করেছেন, এমন অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ২০১২ সালে দায়ের করা দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় এ রায় এসেছে।
২০১২ সালে অনিয়ম দুর্নীতির দায়ে ডেসটিনির কর্তা ব্যক্তিরা ধরা পড়ার পর কেটে গেছে প্রায় ১০ বছর। এত বছরেও প্রতারিত গ্রাহকদের কেউ কোনো টাকা ফেরত পাননি। ডেসটিনির নিজের হিসাবেই তাদের ক্রেতা, পরিবেশক ও বিনিয়োগকারী মিলে ৪৫ লাখ। আর বেসরকারি হিসেবে তাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২ কোটির বেশি মানুষ! পাশাপাশি ডেসটিনির দেখাদেখি তাদের মতো বহু কোম্পানি সেসময় একইধরণে ব্যবসার নামে প্রতারণায় যুক্ত হয়ে আরও বহু মানুষের ক্ষতি করেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের অর্থ উদ্ধারে আদালত নানা সময়ে নানা পদক্ষেপ নিয়েছিল। মাঝখানে ডেসটিনির গাছ বিক্রি করে টাকা সংগ্রহের দায়িত্ব নিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের একজন সাবেক সাংসদ। ৩৫ লাখ গাছ বিক্রি করে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা অথবা নগদ ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সরকারের কাছে জমা দেয়ার নির্দেশনা এখনও বহাল। কিন্তু এক টাকাও জমা হয়নি।
এছাড়া ডেসটিনির সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব যাদের দেওয়া হয়েছে, তাদের কাছ থেকে হিসেব নেয়া ও রক্ষার ব্যবস্থা নেয়াও জরুরি। সম্পত্তি রক্ষার স্বার্থে যা যা করা দরকার তা করা উচিত।
আইনি পদক্ষেপ বা কার্যক্রমের কারণে ডেসটিনির সম্পত্তি বিক্রি বা গ্রাহকের ক্ষতিপূরণে নানা বাধ্যবাধকতা ছিল বলে জানা যাচ্ছিল, বর্তমানে রায় হওয়াতে সে বাধা কিছুটা হলেও কেটেছে বলে আমরা মনে করি। এছাড়া ডেসটিনির মতো পরিকল্পনা করে কোন কোম্পানি যাতে জনগণকে প্রতারিত করতে না পারে, সে হিসেবে আদালতে এই রায় একটি মাইলফলক। এখনই সময় প্রতারিত জনগণের কথা মাথায় রেখে ব্যবস্থা নেবার।