ছয়টি ট্র্যাভেল এজেন্সির আড়ালে মাহবুবুর রহমান স্বর্ণ চোরাচালানের ব্যবসা করত। প্রতি মাসে স্বর্ণের তিনটি চালান আসত। প্রতি কেজিতে মাহবুবুরের কমিশন এক লাখ টাকা। গত ছয় বছরে এভাবে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি।
শনিবার রাতে উত্তরা ছয় নম্বর সেক্টরে মাহবুবুরের বাড়িতে তাৎক্ষনিক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।
বিপুল পরিমাণ স্বর্ণসহ আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালানকারী চক্রের ২ জন সক্রিয় সদস্যকে আটক প্রসঙ্গে তাৎক্ষনিক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
শনিবার ভোরে কাজী মাহবুবুর রহমান ও মীর জাকির হোসেনকে আটক করে র্যাব-১। এ সময় চোরাচালানের ১শ’ গ্রাম ওজনের ১৩৫টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা।
র্যাব-১ এর সিও লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম জানান, দুইজন আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের দুই সদস্য। মূলত মাহবুবুর চোরাচালানের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। জাকির মূলত ক্যারিয়ার হিসেবে কাজ করত।
তিনি বলেন, শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন মাহবুবুর। স্বর্ণের ব্যাগটি তিনি উড়োজাহাজে ফেলে আসেন। পরে সন্ধ্যার দিকে গিয়ে গেট থেকে স্বর্ণসহ ব্যাগটি নিয়ে আসেন। র্যাবের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল ব্যাগ নিয়ে তিনি বাড়ি ফিরছেন।
শনিবার ভোর ৪টার দিকে র্যাব সদস্যরা বাড়িতে ঢুকে মাহবুবুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তিনি স্বর্ণ চোরাচালানের কথা স্বীকার করেন।
সারওয়ার বিন কাশেম জানান, মাহবুবুর দুবাইয়ের স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। সেখানে যা সিদ্ধান্ত হতো, মাহবুবুর তাই বাস্তবায়ন করতেন। দেশে স্বর্ণের চালান আসার পর তার দায়িত্ব ছিল খুচরা বাজারে বিক্রি করা। জাকিরের দায়িত্ব ছিল দোকানে দোকানে স্বর্ণ পৌঁছে দেওয়া।
২০১০ সালে সাড়ে তিন কোটি টাকা দিয়ে উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কের ১২ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাট কেনেন মাহাবুবুর।
এক প্রশ্নের জবাবে র্যাবের সিও বলেন, কিভাবে বিমানবন্দর থেকে স্বর্ণ বের হতো সেটাই তদন্ত করা হবে এবং জড়িতদের অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
মাহবুবুরের বাড়ির দারোয়ান ইউনুস সাহাবুল্লাহ জানান, তিন মাস যাবৎ মাহবুবুরের স্ত্রী ও দুই ছেলে মেয়ে আমেরিকায় আছেন।