বাঙালীর গর্বের, গৌরবের মাস মার্চ। এই মাসেই ঘোষিত হয় বাঙালীর স্বাধীনতা, বাংলাদেশ নামের একটি নতুন দেশের স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাঙালী ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তির মরণপণ লড়াইয়ে। স্মৃতির মণিকোঠা থেকে ১৯৭১-এর মার্চের সেই দিনগুলোকে সবার কাছে তুলে ধরতে চ্যানেল আই সংবাদের আয়োজন, উত্তাল মার্চের এই দিনে।
পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর চলাচল বন্ধ করতে জয়দেবপুর ও গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকার রাস্তায় ইট ও কাঠের গুঁড়ি ফেলে শত শত ব্যারিকেড তৈরী করে আন্দোলনকারী জনতা। ব্যারিকেড তুলে ফেলার চেষ্টা করলে বাধা দেয় জনতা। জনতা ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয় জয়দেবপুরে। নির্বিচারে গুলি চালায় পাকিস্তানী বাহিনী। শহীদ হন হুরমত, নিয়ামত, মনু খলিফাসহ আরো অনেকে।
আশপাশের বাড়ী বাড়ী ঘুরে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার ওপর নির্যাতন চালায় পশ্চিম পাকিস্তানীরা। সন্ধ্যায় জয়দেবপুর শহরে অনির্দিষ্টকালের জন্য সান্ধ্য আইন জারি করা হয়।
কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের পূর্ব বাংলা সমন্বয়ক কমিটির সদস্য হায়দার আকবর খান রনো বলেন, ‘জয়দেবপুরে সৈন্য বিদ্রোহ করেছিল। পরে তারা কে এম শফিউল্লাহর নেতৃত্বের কাছে পিছু হটে।
নারকীয় হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, যারা বুলেট বা শক্তি দিয়ে গণআন্দোলন স্তব্ধ করবেন বলে ভেবেছেন তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। বাংলাদেশের মানুষ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়। কিন্তু এর অর্থ এই নয়, তারা শক্তি প্রয়োগকে ভয় পায়।
হায়দার আকবর খান রনো বলেন, সেদিন সমস্ত দেশব্যাপী বাংলাদেশের পতাকা উম্মোচিত হয়েছিল। পাকিস্তানী প্রশাসন সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়ে যায়। ক্যান্টনমেন্ট ছাড়া কোথাও পাকিস্তানের প্রশাসন ছিল না।
একদিন বিরতির পর আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে তৃতীয় দফা বৈঠক হয়। প্রেসিডেন্ট ভবনে দেড় ঘণ্টার ওই আলোচনায় তৃতীয় কেউ উপস্থিত ছিলেন না।