জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে ও প্রতিকারে সুশীল সমাজ সংগঠন ও সরকারি মাল্টি-সেক্টরাল ডিপার্টমেন্টের প্রতিনিধিরা সমন্বিতভাবে ও একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে যথোপযুক্ত পলিসি এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে সমাজের সকল স্তরে ‘শূন্য সহিষ্ণুতা’ মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ইউএনএফপিএ’র অংশীদার সংগঠন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, একশন এইড বাংলাদেশ, আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং কেয়ার বাংলাদেশ যৌথভাবে ক্যানাডিয়ান এম্বাসি ও নেদারল্যান্ডস এম্বাসির অর্থায়নে আজ( বুধবার) একটি অনলাইন লাইভ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
‘জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে ও প্রতিকারে প্রত্যেকের ভূমিকা আছে’ শীর্ষক এই অনলাইন অনুষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উপলক্ষে আয়োজন করা হয়।
এই লাইভ অনুষ্ঠানটিতে প্রায় তিনশোর অধিক নারী অধিকার কর্মী, সুশীল সমাজ সংগঠন, নীতিনির্ধারক, সরকারি মাল্টি-সেক্টরাল সেবাপ্রদানকারী সংস্থা ও গণমাধ্যম সংস্থা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে আলোচকরা জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার শিকার সারভাইভারদের জন্য সমন্বিত ও বৈষম্যহীন উপায়ে সরকারি মাল্টি-সেক্টরাল সেবা নিশ্চিতের মাধ্যমে ন্যায় বিচার তথাপি নির্যাতন হ্রাসের ওপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানে ‘জিবিভি সেবাসমূহে প্রবেশগম্যতা: বাস্তবতা, বাধা এবং সুপারিশ’ শীর্ষক একটি পলিসি নোট পরিবেশন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানথ্রপলজি বিভাগের প্রভাষক আইনুন নাহার, যেখানে তিনি সেবাসমূহে বিভিন্ন অসামঞ্জ্যতা ও আরও কার্যকরীভাবে সারভাইভারদের সেবাদানের বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
উক্ত আলোচনা পরিচালনাকালে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী সদস্য ফস্টিনা পেরেরা সমাজে সমতা প্রতিষ্ঠার আগে সাম্যর নিশ্চয়তা দাবি করেন এবং বিভিন্ন মানুষের প্রয়োজনসমূহের ভিন্নতাকে বিবেচনায় রেখে সেবা নিশ্চিতে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে কানাডিয়ান রাষ্ট্রদূত বেনওয়া প্রেফনটেইন বলেন, জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধের উপায় হলো সবাইকে মানুষ হিসেবে সম্মান করা। সাম্প্রতিক সময়ে ক্রমবর্ধমান নির্যাতনের পরিসংখ্যানগুলোকে বিবেচনায় রেখে সকল ধরনের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে জরুরি অবস্থার জানান দিয়ে একসাথে এ পরিস্থিতি পরিবর্তনে কাজ করতে হবে।
এসময় ইউএনএফপিএ-এর রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. অসা টরকেলসন বলেন, আমরা জোর দিয়ে বলতে চাই যথেষ্ট হয়েছে পারিবারিক সহিংসতা, যথেষ্ট হয়েছে ধর্ষণ, বাল্যবিবাহ, যৌন নির্যাতন। আর নয়। জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে সমাজের প্রত্যেকের ভূমিকা আছে এবং ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগতভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
একশন এইড বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর তার বক্তব্যে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহিষ্ণুতা’ মেনে চলা, নারীদের জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করা ও পুরুষদের ক্ষমতার অপব্যবহারের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সংবেদনশীল করে তোলার প্রতি জোর দেন।
প্যানেল আলোচনায় বিভিন্ন সরকারি মাল্টি-সেক্টরাল ডিপার্টমেন্ট, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়, সমাজ-কল্যাণ অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ পুলিশ-এর প্রতিনিধিরা অংশ নেন এবং জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে সমন্বিতভাবে ও বৈষম্যহীন উপায়ে সেবা প্রদানের বিষয়ে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।