জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে।
উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা প্রায় দশ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরসহ ১০ জন আহতের তথ্য জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জেরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আবু সুফিয়ান চঞ্চল ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ রাসেলের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আবারও যেকোনো সময় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ছাত্রলীগের নেতা- কর্মীরা জানায়, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহমেদ রাসেল আজ বিকেলে সস্ত্রীক ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসেন। এ সময় বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চল তার অনুসারীদের নিয়ে রাসেলকে মারধর করে বলে ক্যাম্পাসে খবর ছড়িয়ে পড়ে।
পরে রাজীবের অনুসারীদের সঙ্গে চঞ্চলের অনুসারীদের মাঝে সংঘর্ষ শুরু হয়।সংঘর্ষের খবর পেয়ে প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় একটি ঢিল প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানের শরীরে এসে লাগলে তাকে সহ আরও চারজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর মনির সিকদার জানান, ‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। বর্তমানে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
ঘটনার সূত্রপাত যেভাবে:
গত ১৪ ডিসেম্বর ক্যাম্পাসে আধিপত্য বজায় রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চলকে মারধর ও গালাগাল করেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহমেদ রাসেল।
এ নিয়ে ওইদিন মধ্যরাতে হলের সামনে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হলে হল প্রভোস্ট ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে চঞ্চল ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাবেক ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে সম্পর্কের দূরত্ব ও প্রকাশ্য শত্রুতা তৈরি হয়।
ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা জানান, ‘রাজীব আহমেদ রাসেল গত কমিটির সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে চঞ্চল ছিলেন তার একনিষ্ঠ অনুসারী।কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দু’জনের মধ্যে নানা ইস্যুতে দূরত্ব তৈরি হয়।
সর্বশেষ গত ১৩ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাবি ক্যাম্পাসের সামনে দিয়ে ঢাকা ফেরার সময় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে জড়ো হন। এদিন চঞ্চলকে রেখেই সহ-সভাপতি নিয়ামুল হাসান তাজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম মোল্লার নেতৃত্বে একটি অংশ আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করে।
এভাবে কর্মসূচি পালন করার পর শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান সাধা দূরত্বের বিষয়টি প্রকাশ পায়। এরই জেরে শুক্রবার রাতে রাসেল ক্যাম্পাসে এসে চঞ্চলকে গালাগাল ও মারধর করেন।’