করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে ‘উপহার’ হিসেবে দেওয়া ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন জানুয়ারিতেই প্রয়োগ শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেছেন, ‘সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল বুধবারই আসবে ভারত সরকারের দেওয়া টিকা। এক্ষেত্রে আমরা পূর্বনির্ধারিত সময়ের আগেই টিকা প্রয়োগের কথা ভাবছি।’
মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
ভ্যাকসিন প্রয়োগে আমাদের ন্যাশনাল প্ল্যান করা আছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন আগে আসলে আগে শুরু করব। তবে, ন্যাশনাল প্ল্যান অনুযায়ীই ভ্যাকসিন প্রয়োগ হবে।
স্বাস্থ্য বিভাগের প্রস্তুতি সম্পর্কে তিনি বলেন, আগামীকাল অথবা পরশু ভারতের দেওয়া উপহারের ভ্যাকসিন আসবে। তবে ফ্লাইট শিডিউল না পাওয়ায় নির্ধারিত ভাবে বলা যাচ্ছে না। যে ভ্যাকসিন আসছে তা প্রথমে ঢাকায় প্রয়োগ করা হবে। পর্যায়ক্রমে তা সারা দেশে দেওয়া যাবে। স্বাস্থ্য বিভাগ এজন্য সম্পূর্ণ তৈরি।
জাহিদ মালেক বলেন, সরকার ভ্যাকসিনের যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তার মধ্যে জেলাপর্যায়ে চারটি টিম, উপজেলায় দুটি টিম ও হাসপাতালে ছয়টি টিম কাজ করবে। প্রাথমিকভাবে ইউনিয়ন ছাড়াও জেলা উপজেলা পর্যায়ে প্রতিদিন দুই লাখ ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন প্রয়োগে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সে বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়া আছে। জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় হাসপাতালও তৈরি আছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানান, ঢাকা থেকেই শুরু হবে করোনা ভ্যাকসিনেশনের কার্যক্রম। ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পাওয়া বিশ লাখ ভ্যাকসিন মূলত ঢাকার স্বাস্থ্যকর্মী, সেনা-পুলিশ-বিজিবি-সাংবাদিকসহ সন্মুখসারির যোদ্ধারা টিকা পাবেন। পরে সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে সরকারের কেনা ৫০ লাখ ডোজ দিয়ে সারাদেশে জাতীয়ভাবে শুরু হবে করোনার টিকাদান কার্যক্রম। আর তখন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শুরু হবে করোনার টিকাদান কার্যক্রম।
তিনি আরও বলেন, ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য ২৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবে। ২০ লাখ আর পরের ৫০ লাখের ভ্যাকসিন মজুদের প্রস্তুতি আছে। প্রাথমিকভাবে জেলা, সিটি করপোরেশন ও ইউনিয়নপর্যায়কে ধরে আনুমানিক ২ লাখ ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. খুরশীদ আলম বলেন, কাল আসছে সেরামের করোনা টিকা। পরে আরও ৫০ লাখ ডোজ আসলে সমন্বয় করে একসঙ্গে সারাদেশে টিকা দেওয়া হবে। এগুলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তিনটি ওয়ার হাউজে রাখা হবে বলেও জানান তিনি।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার, মো. খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এবং অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।