নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরের ফটো প্রদর্শনীতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবনের মডেল।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও এস্তোনিয়া স্থায়ী মিশনের যৌথ উদ্যোগে সোমবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘দ্বীপ থেকে দ্বীপে- লুই আই কান’র সৃজনশীল পদচারণা’ শীর্ষক একটি চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
প্রদর্শনীতে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল লুই আই কান’র নকশায় নির্মিত ‘বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবন’। যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর কেড়েছে।
স্থপতি ও ফটোগ্রাফার আর্নে ম্যাসিকের পরিকল্পনায় এই চিত্র প্রদর্শনীতে জাতীয় সংসদ ভবনের চিত্রের পাশপাশি এস্তোনিয়ায় জন্মগ্রহণকারী মার্কিন স্থপতি লুই আই কানের জগৎ বিখ্যাত স্থাপত্য সমূহের বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরা হয়।
এস্তোনিয়া রাষ্ট্রপতি মিজ্ কারস্টি কালজুলেইড, বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান রাসেল, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি মিজ্ মারিয়া ফার্নান্দে এস্পিনোসা গার্সেজ এবং লুই আই কান’র ছেলে ন্যাথানিয়েল ক্যান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন: বিংশ শতকের অন্যতম সেরা স্থপতি লুই আই কান এবং তার অমর সৃষ্টি ‘বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবনসহ অন্যান্য স্থাপনাসমূহকে স্মরণ করছি। ভাবতে অবাক লাগে, এস্তোনিয়ায় জন্মগ্রহণকারী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা একজন স্থপতি এত দূরের একটি দেশে গিয়ে কীভাবে এমন অনুপম স্বাক্ষর রেখে গেলেন? নিশ্চিতভাবে এটি ছিল তার হৃদয়সৃষ্ট একটি পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই উত্তর-দক্ষিণের বন্ধুত্বের এক অবিনাশী স্মারক। এই স্থাপত্য বাংলাদেশ ও এস্তোনিয়ার মধ্যে সৃষ্টি করেছে অটুট বন্ধুত্বের বন্ধন।
জাতীয় সংসদ ভবনের বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করে তিনি বলেন: এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ সংসদ ভবন এবং একটি স্থাপত্যের বিস্ময়। যাতে ব্যবহার করা হয়েছে দেশীয় উপকরণ। যার নকশায় তুলে ধরা হয়েছে আবহমান বাঙালি স্থাপত্যধারা। যেখানে কৃত্রিম লেকের মাধ্যম দেখানো হয়েছে নদী-মাতৃক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করে জাহিদ হাসান রাসেল বলেন: এই ভবন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতীকে পরিণত হয়েছিল, যেমনটি ভেবেছিলেন কান। বাংলাদেশের মানুষের কাছে এটি শুধু সংসদ ভবনই নয়; এটি স্থিতিশীলতা, মর্যাদা ও জাতির গর্বের প্রতীক।
বাংলাদেশের সংসদ ভবনকে লুই আই কান’র অন্যতম সেরা স্থাপনা হিসেবে উল্লেখ করে এস্তোনিয়ার রাষ্ট্রপতি মিজ্ কারস্টি কালজুলেইড বলেন, কানের সৃষ্ট ভাস্কর্যসমূহ ন্যায়, স্বাধীনতা ও মর্যাদার প্রতীক, যার জন্য জাতিসংঘ কাজ করছে।
লুই আই কানের ছেলে ন্যাথানিয়েল ক্যান তার পিতার স্থাপত্য কর্মের দর্শন -‘মানবীয় ঐকমত্য’র কথা উল্লেখ করে বলেন, আজকের পৃথিবীতে এটি বড়ই প্রয়োজন।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, এস্তোনিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি সিভেন জুরগেনসনসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনৈতিক ও জাতিসংঘের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।