‘শৈশবে খেলাধূলা আর পড়াশোনা নিয়ে সময় কেটে যাওয়ায় জন্মদিন মাথায় থাকতো না। জন্মদিন নিয়ে কখনও কিছু করা হয়নি। কিন্তু ঈদ আর পূজোর জন্য খুব বেশি অপেক্ষা করে থাকতাম। কারণ জন্মদিনটা যদি ব্যক্তিগত হয় তাহলে ঈদ ও পূজা সামাজিক উৎসব। ওই উৎসবগুলোতে অনেকের সঙ্গে দেখা হয়। তাই ছোটবেলায় জন্মদিন থেকে এরকম উৎসবগুলোই বেশি টানতো।’
জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন তার জন্মদিনে চ্যানেল আই অনলাইনকে এমন অনুভূতির কথাই জানালেন।।
তিনি বলেন: জন্মদিনে মায়ের হাতে যে কোনো খাবার খেতে খুব বেশি পছন্দ করতাম। এমনিতে ভাত-মাছ বেশি পছন্দ করি। কিন্তু মায়ের হাতের যে কোনো খাবার এক অসাধারণ বিষয়।
শুধু জনপ্রিয়তা নয়, কালোত্তীর্ণ অনেক উপন্যাস লিখেছেন সেলিনা হোসেন। তার বিখ্যাত উপন্যাস ‘হাঙর নদীর গ্রেনেড’ দিয়ে তৈরি হয়েছে চলচ্চিত্র।
কর্মব্যস্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবসময় লেখালেখি নিয়েই ব্যস্ত থাকি। চিন্তা আছে এবারের একুশের বই মেলায় একটি উপন্যাস প্রকাশ করার।
উপন্যাসের বিষয়বস্তু মুক্তিযুদ্ধে হারানো তিন অমর মানুষ: চলচ্চিত্র পরিচালক জহির রায়হান, সুরকার আলতাফ মাহমুদ এবং দেশপ্রেমিক মোয়াজ্জেম হোসেন যাকে পাকিস্তানী হানাদাররা তুলে নিয়ে গিয়েছিলো।
তিনি বলেন: আমি একটি চরিত্র তৈরি করেছি। যে চরিত্র নিখোঁজ মানুষগুলোকে খুঁজে বেড়াবে। যে চলচ্চিত্র ভালোবাসে সে জহির রায়হানকে খুঁজে। যে রবীন্দ্র সঙ্গীত গাইছে সে আলতাফ মাহমুদকে খুঁজছে। আর দেশকে ভালোবাসা চরিত্রটি মোয়াজ্জেম হোসেনকে খুঁজবে।
‘যারা দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন, সেই মানুষগুলোকে খুঁজে বের করবে ওই চরিত্র,’ উপন্যাসটি সম্পর্কে জানালেন সেলিনা হোসেন।
কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন: কিছু তথ্য
সেলিনা হোসেনের জন্ম ১৯৪৭ সালের ১৪ জুন রাজশাহী শহরে। তার পৈতৃক বাড়ি লক্ষীপুর। ১৯৬৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি এ অর্নাস পাশ করে ১৯৬৮ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় এম এ পাশ করেন সেলিনা হোসেন।
কর্মজীবন শুরু ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমিতে গবেষণা সহকারি হিসেবে। ১৯৯৭ সালে বাংলা একাডেমির প্রথম নারী পরিচালক হন তিনি।
সেলিনা হোসেনের উপন্যাসের সংখ্যা ২১ টি, গল্পগ্রন্থ ৭ এবং প্রবন্ধগ্রন্থ ৪টি।
একুশে পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কারসহ বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছেন সেলিনা হোসেন।