জনস্বার্থ ছাড়া পুলিশ কোনো গাড়ি রিকুজিশন করতে পারবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এসংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ কয়েক দফা নির্দেশনা দিয়ে আজ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে রুলের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। আর ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)’র পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোশতাক হোসেন।
আজকের রায়ের বিষয়ে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুলিশের রিকুইজিশন বাণিজ্য নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে প্রকাশিত সেসব খবর যুক্ত করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ -এইচআরপিবি’র পক্ষ থেকে একটি রিট করা হয়। এরপর ২০১০ সালের ২৩ মে আদালত রুল জারি করেন। সে রুলের উপর দীর্ঘ শুনানি নিয়ে রুলটি নিষ্পত্তি করে এবং মামলাটি চলমান রেখে আজ রায় দেন আদালত।’
এই আইনজীবী আরো বলেন, ‘আইনে বিশেষ কারণে প্রয়োজনে গাড়ি রিকুইজিশন করার ক্ষমতা দেওয়া হলেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন।’
আজ রায়ে হাইকোর্ট যে নির্দেশনাগুলো দিয়েছে সেগুলো হচ্ছে:-
# যে কোনো গাড়ির রিকুইজিশন অবশ্যই জনস্বার্থে করতে হবে। যদি কোনো কর্মকর্তা তা না করে সে কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
# রিকুইজিশন করা গাড়ি কোনো কর্মকর্তা ব্যক্তিগত বা পরিবারের কাজে ব্যবহার করতে পারবেন না। করলে অসদাচরণের জন্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
# প্রাইভেটকার, সিএনজি, ট্যাক্সি রিকুইজিশন করা যাবে না।
# প্রত্যেক পুলিশ স্টেশনে রিকুইজিশন করা গাড়ির তালিকা সংরক্ষণ করতে হবে।
# রিকুইজিশন সংক্রান্ত যে কোনো অভিযোগ পুলিশ কমিশনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন।
# রিকুইজিশন করা গাড়ির কোনো ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। গাড়ির পেট্রোল খরচ বহন করতে হবে। চালকদের খাবার খরচও দিতে হবে।
# ছয় মাসের মধ্যে একই গাড়ি দুইবার রিকুইজিশন করা যাবে না।
# নারী, শিশু, রোগী বহনকারী গাড়ি রিকুইজিশন করা যাবে না।
# এসব নির্দেশনা পালনে পুলিশ কমিশনার একটি সার্কুলার জারি করে তা সব পুলিশ কর্মকর্তার কাছে পাঠাতে হবে এবং নির্দেশনা মানা নিশ্চিত করতে হবে।