জঙ্গিবাদ আর মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার ব্যর্থতার দায় অকপটে স্বীকার করে নিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক।পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স এবং জঙ্গি দমনে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ রোল মডেল হওয়া সত্ত্বেও দায়িত্বকালীন ৫ বছরে (২০১৩- ২০১৭) তা নির্মূল করতে পারেননি। কারণ: দুটোই আসক্তি। পুলিশের এ শীর্ষ কর্মকর্তা আরেকটি বাস্তব সত্যকে জাতির সামনে দাঁড় করিয়ে বলেছেন, শুধু আইন প্রয়োগ করে, পুলিশ দিয়ে মাদক ঠেকানো সম্ভব নয়। এগুলো দমন করতে পরিবার থেকে শুরু করে সমাজের সকল স্তরে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। তবে তার সময়ে পুলিশি তৎপরতায় অপরাধ প্রবণতা প্রায় অর্ধেকে কমে এসেছে বলে দাবি করেছেন তিনি। মাদক বিষয়ে পুলিশের দেয়া এক পরিসংখ্যানেই উঠে এসেছে সারাদেশে এর ভয়াবহ চিত্র। গত ৫ বছরে মাদক চোরাচালানে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রায় ৩ লাখ মামলা হয়েছে, অভিযুক্ত যারা বেশির ভাগই ইয়াবা পাচারের সঙ্গে জড়িত ছিল। আমরা জানি, ইয়াবা মাদকই আজ পুরোদেশকে গ্রাস করতে বসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে স্কুলের সীমানায় পৌঁছে গেছে। এ কারণে পরিবারের পাশাপাশি সরকারও বিষয়টা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে। তারপরও কোনোভাবেই ইয়াবাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। একইভাবে গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার পর জঙ্গিবাদ নিয়েও শঙ্কিত মানুষ। ওই হামলার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এসব অভিযানে অর্ধশতাধিক জঙ্গি আত্মঘাতী হলেও থেমে থাকেনি তাদের তৎপরতা। এখনো নানাভাবে, নানা কৌশলে জঙ্গিরা তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পুলিশের পাশাপাশি পরিবার এবং সমাজের কার্যকর ভূমিকা চেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আমরাও আইজিপির সঙ্গে একমত পোষণ করে বলতে চাই; পরিবার এবং সমাজের সক্রিয় ভূমিকা ছাড়া জঙ্গিবাদ ও মাদকের হাত থেকে মুক্ত হবে না জাতি।