চলতি বছর এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত চার মাসে পানিতে ডুবে ১ হাজার ৯২৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।সংশ্লিষ্টরা বলছেন শিশুকে সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে রাখলে এ দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব।
বাংলাদেশে ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিনার্গোস এমন তথ্য দিয়েছে।
সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলছেন, চার মাসে শিশুমৃত্যুর তথ্যটি বাংলাদেশের ১০টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত উৎস থেকে নেয়া হয়েছে।
অনেক শিশুমৃত্যুর ঘটনা সংবাদমাধ্যম কিংবা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে না। বাস্তবে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর হার আরো বেশি। সংস্থাটি বলছে, দেশে পানিতে ডুবে প্রতিদিন ৩২ জনের মধ্যে এক থেকে চার বছর বয়সী শিশুর মৃত্যু হয়।
চলতি বছরের এপ্রিল, মে, জুন ও জুলাইয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের আলোকে শিশুমৃত্যু সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদনের মাধ্যমে এ তথ্য দেয় সিনার্গোস।
এতে বলা হয়, এপ্রিল বাদে বাকি তিন মাসে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক শিশুর মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে। মে মাসে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ৪৩২টি, যার মধ্যে ১৯২ শিশুরই মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে।
জুনে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ৫৯৮ শিশুর মৃত্যু হয়েছে, যার ৮১ শতাংশ বা ৪৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে। জুলাইয়ে মোট ৭৬০ শিশু মৃত্যুর খবর প্রকাশ হয়েছে সংবাদমাধ্যমে।
এর মধ্যে ৮৬ শতাংশ বা ৬৫২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে। এ চার মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ১০৩ ও সহিংসতায় ১২৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ১-১৭ বছর বয়সী শিশুমৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ পানিতে ডুবে যাওয়া।
সিনার্গোস বাংলাদেশের পার্টনারশিপ লিড এশা হুশেইন বলেন: দেশে শিশুমৃত্যুর ঘটনাগুলো বিছিন্নভাবে হলেও পরিসংখ্যান এক করলে তা শিশুমৃত্যুর প্রধান কারণ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। শিশুদের সুরক্ষায় ডে কেয়ার সেন্টার, বাড়িতে শিশু বেষ্টনী তৈরির পাশাপাশি ব্যাপক সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর ঘটনা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন: সিনাগোর্স বর্তমানে শিশুদের উন্নয়নে কর্মরত বিভিন্ন সংগঠন এবং সরকারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের শারীরিক, মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে স্থায়ী শিশুযত্ন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিসের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশে সিআইপিআরবি ও আইসিডিডিআরবি ২০১২ সাল থেকে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধে এক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।