দেশে করোনা ভ্যাকসিন দেয়ার চতুর্থ দিনে এক লাখ ৫৮ হাজার ৪৫১ জন টিকা নিয়েছেন। এরমধ্যে পুরুষ এক লাখ ১১ হাজার ৬৯১ জন ও নারী ৪৬ হাজার ৭৬০ জন ভ্যাকসিন নেন।
বুধবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ্ ইমার্জেন্সী অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের (এমআইএস) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বুধবার ঢাকা মহানগরীতে ভ্যাকসিন নিয়েছেন ১৯ হাজার ১১৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১২ হাজার ৭৬৬ জন ও নারী ছয় হাজার ৩৪৯ জন ভ্যাকসিন নেন।
ঢাকা বিভাগে ভ্যাকসিন নিয়েছেন ৪০ হাজার ৯০৭ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২৮ হাজার ২৯২ জন ও নারী ১২ হাজার ৬১৫ জন ভ্যাকসিন নেন। এছাড়াও ময়মনসিংহ বিভাগে সাত হাজার ৫৪৯ জন ভ্যাকসিন নেন; যার মধ্যে পুরুষ পাঁচ হাজার ৩৪৭ ও নারী দুই হাজার ২০২ জন।
চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৭ হাজার ৪৫৮ জন ভ্যাকসিন নেন; যার মধ্যে পুরুষ ২৬ হাজার ৪৮৭ জন ও নারী ১০ হাজার ৯৭১ জন ভ্যাকসিন নেন।
রাজশাহী বিভাগে ১৭ হাজার ৯৭১ জন ভ্যাকসিন নেন; যার মধ্যে পুরুষ ১২ হাজার ৬৮৭ জন ও নারী পাঁচ হাজার ২৮৪ জন।
রংপুর বিভাগে ১৪ হাজার ২২৪ জন ভ্যাকসিন নেন; যার মধ্যে পুরুষ ১০ হাজার ৩৯৪ জন ও নারী তিন হাজার ৮৩০ জন।খুলনা বিভাগে ১৭ হাজার ১১৫ জন ভ্যাকসিন নেন; যার মধ্যে পুরুষ ১২ হাজার ২৮০ ও নারী চার হাজার ৮৩৫ জন।
বরিশাল বিভাগে ছয় হাজার ১৪৭ জন ভ্যাকসিন নেন; যার মধ্যে পুরুষ চার হাজার ৪৭৯ জন ও নারী এক হাজার ৬৬৮ জন এবং সিলেট বিভাগে ১৭ হাজার ৮০ জন ভ্যাকসিন নেন; যার মধ্যে পুরুষ ১১ হাজার ৭২৫ জন ও নারী পাঁচ হাজার ৩৫৫।
বুধবার রাজধানীর শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে করোনা ভ্যাকসিন নেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমসহ ঢাকায় অবস্থান করা বিদেশি ২১ কূটনীতিক করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের পর টিকা নেন ভ্যাটিকেন সিটির প্রতিনিধি এবং ডিপ্লোমেটিক কোরের ডিন জর্জ কোসারি ও ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দ্বোরাইস্বামী।
যারা ভারতীয় ভ্যাকসিন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছে তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছে বলে মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী। ভ্যাকসিন নিয়ে তিনি জানান, পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশে অবস্থান করা প্রায় ১২ শতাধিক কূটনীতিককে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ভ্যাকসিন বিষয়ে সব সময় সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও আশ্বাস দেন শাহরিয়ার আলম। এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দ্বোরাইস্বামী সবাইকে ভ্যাকসিন নিতে অনুরোধ করেন। করোনা বাস্তব্তায় নয়া দিল্লি ঢাকার পাশে থাকবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এছাড়া কূটনীতিকদের মধ্যে ভ্যাকসিন নেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত রেনসেক তেরঙ্কি, জার্মান রাষ্ট্রদূত পিটার ফারহেনটোল্ডজ, ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার বিশ্বদ্বীপ দে, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ও ডেপুটি রাষ্ট্রদূত জিন-মেরিন সুইউ ও ফ্রাঙ্ক গ্রুটমেসার, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের স্ত্রী মেরি-কেরোলিন সুইউ-চেনলিশ, অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জেরমি ব্রুআর, অস্ট্রেলিয়ার উপ-হাইকমিশনার ও ফ্রাস্ট সেক্রেটারি ও কনসুল নারডিয়া শিমপসন ও সানুকি জয়ারাজ, ইইউ’র কূটনীতিক হেইবারগার ও ওপরিটিসকো, এলিনা ওপরিটিসকো, থমাস এরিস, হাক বিরগিট, ফ্রান্স হাইকমিশনের কূটনীতিক সোনালজি জুডনেক ও জারজি জুডনেক এবং ইতালির রাষ্ট্রদূত এনরিকো নানজিআটা।
গত ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। সে সময় দুই দিনে মোট ৫৬৭ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।
বাংলাদেশে এই ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলক প্রয়োগ না হওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী তাদের এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণ করা হয়। কারও মধ্যে গুরুতর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা না দেওয়ায় পরিকল্পনা মত রোববার গণ ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হয়।