একত্রিশ বছর বয়সী অভিজ্ঞ জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যান ম্যালকম ওয়ালার এবং বাংলাদেশের জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপানোর অপেক্ষারত সদ্যই ২০ বছরে পা রাখা উদীয়মান তারকা মোসাদ্দেক হোসেন যে অসম্ভবের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন ঢাকা ডায়নামাইটসকে তা মাত্র দুই বলের ব্যবধানেই মিলিয়ে যায়।
ঘূর্ণি জাদুকর তাইজুল ইসলাম ১৮ তম ওভার করতে এসে শেষ দুই বলে ফেরান গ্যালারি উন্মাতাল করে বিধ্বংসী ইনিংস উপহার দেয়া এই দুই ব্যাটসম্যানকে। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে এ দুজন ২৬ বলে ৪১ রান করেন।
গেইল ও সাব্বিরের ক্ষণিক ঝড়ের কাছে পরাজিত হলো ম্যালকম ও মোসাদ্দেকের ঝড়ো ইনিংসটি। জয়ের হাসি ক্যারিবিয়ানের মুখেই থাকলো। আর আসর থেকে বিদায় নিতে হলো ঢাকাকে। রোববার রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে কোয়ালিফাইয়ার টু ম্যাচ খেলবে বরিশাল।
নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১১৭ রান সংগ্রহ করে কুমার সাঙ্গাকারার ঢাকা। জয়ের লক্ষ্য যেখানে ১৩৫ রান সেখানে মোসাদ্দেকের মাত্র ২৬ রানই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস হলে জয় পাওয়া দুরাশা। ঢাকার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে বরিশাল ১৮ রানের জয় পায়।
ঢাকার ব্যাটিংয়ে ধ্বস নামাতে মূখ্য ভূমিকা রাখেন এবারের আসরে একমাত্র হ্যাটট্রিক করা এবং দুর্দান্ত ফর্মে থাকা আল আমিন হোসেন ও কেভন কুপার। দুজনই তিনটি করে উইকেট শিকার করেন। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে মোসাদ্দেকের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রান করেন ফরহাদ রেজা। মূল ভরসা সাঙ্গাকারা মাত্র ১০ রান করেই আল আমিনের বলে তার হাতেই ক্যাচ হয়ে ফেরেন।
শেষ দিকে এসে ঢাকা শিবিরে জয়ের সুবাস ছড়ালেও ম্যালকম ও মোসাদ্দেকের বিদায়ের পর শেষ দুই ওভারে ২৬ রানের লক্ষ্যটি ছুঁতে পারলো না ইয়াসির শাহ, মোশাররফ হোসেন এবং নাবিল সামাদরা। প্রথম সারির ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার পর টেল এন্ডাররাও পারলো না ঢাকা ডায়নামাইটসের ফাইনালের আশা টিকিয়ে রাখতে।
টসে হেরে ব্যাট করতে নামা বরিশাল বুলস ক্যারিবিয়ান ‘অতিমানব’ ক্রিস গেইল এবং সাব্বির রহমানের চার-ছয়ের ফুলঝুরিতে শুরুতেই রান পাহাড়ের ইঙ্গিত দিলেও মাত্র ৫ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান সংগ্রহ করে। ১৯ বলে ৩১ রান করা গেইল এবং সাব্বির ৩৯ বলের ৪১ রানের ইনিংস শেষে রানের চাকাও ধীর হয়ে যায়। পরে অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ৩৩ বলে ৩৭ রানে ঢাকা ডায়নামাইটসের সামনে লড়ার মতো এক লক্ষ্য ছুড়ে দেয় বরিশাল।
ঢাকার বোলিংয়ের মূল অস্ত্র কাটার বিশেষজ্ঞ মুস্তাফিজুর রহমান আজ দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দেন। গেইল ঝড়কে বিদায় করে দর্শকদের দানবীয় ব্যাটিংয়ের সৌন্দর্য্য থেকে বঞ্চিত করে নিজ শিবিরে স্বস্তির হাওয়া বইয়ে দেন এই বিস্ময় বালক। পরে মাহমুদুল্লাহকেও ফিরিয়ে বরিশালকে অল্পতেই আটকে রাখতে মূল ভূমিকা রাখেন। এছাড়াও নাসির হোসেন এবং নাবিল সামাদ একটি করে উইকেট লাভ করেন।