৩৭০ ধারা বাতিলের ফলে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনসহ সাংবিধানিক বিশেষ মর্যাদা বিলোপে বড় বড় অনেকগুলো জটিলতা দেখা দিয়েছে। কিন্তু সেগুলো ছাপিয়ে গুগল সার্চে শীর্ষে জায়গা পেয়েছে কাশ্মীরি মেয়েদের বিয়ে করা নিয়ে নানা খোঁজখবর।
ধারাটি বাতিলের তিনদিন যেতে না যেতেই পাল্টে গেছে ভারতে গুগল সার্চের ধারা। মুঠোফোনে এই সার্চের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।
সার্চ ইঞ্জিন গুগলের দেয়া তথ্য অনুসারে, ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির পরই ভারতে গুগল সার্চের ট্রেন্ডিংয়ে এক নম্বরে উঠে এসেছে কাশ্মীর। সেখানে কাশ্মীরি মেয়েদেরই সবচেয়ে বেশি খোঁজা হচ্ছে।
মূলত গুগলে দু’টি কি-ওয়ার্ড দিয়ে সবচেয়ে বেশি সার্চ করা হয়েছে। যার মধ্যে এক নম্বরে রয়েছে ‘কাশ্মীরি গার্ল’ এবং দুই নম্বরে রয়েছে ‘কাশ্মীরি গার্লস’। এছাড়াও ‘ম্যারি কাশ্মীরি গার্ল’ কি-ওয়ার্ড দিয়েও সার্চ করা হয়েছে অসংখ্যবার।
পুরো ভারতই এখন জানতে চাইছে কাশ্মীরি মেয়ে এবং তাদেরকে বিয়ে করার নানান ফিকির সম্পর্কে। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে ৬টি রাজ্য।
এই সার্চের ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে কেরালা। শতভাগ সাক্ষর এই রাজ্য গত তিন দিনে সবচেয়ে বেশিবার সার্চ করেছে কাশ্মীরি মেয়েদের বিয়ে করার বিষয়টি নিয়ে। কেরালার পরই দ্বিতীয় স্থানে আছে কর্নাটক। এই দুই রাজ্যের মানুষ পড়িমরি খুঁজছে কাশ্মীরি মেয়েদের বিয়ের সুযোগ।
তারপরই যথাক্রমে রয়েছে দিল্লি, মহারাষ্ট্র এবং তেলেঙ্গানা।
তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে পশ্চিমবঙ্গ। সপ্তম ও অষ্টম স্থানে যথাক্রমে তামিলনাড়ু ও উত্তরপ্রদেশ।
ঝাড়খণ্ড ও উত্তরখণ্ড থেকে সব থেকে বেশি গুগল সার্চ এসেছে কাশ্মীরি মেয়েদের নিয়ে। সেই তালিকায় ১৬ নম্বর অবস্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। তবে সার্বিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সার্চে ৮৭ শতাংশ খুঁজছে কাশ্মীরি মেয়েদের।
৩৭০ ধারা বাতিলের পর সোমবার সন্ধ্যা থেকে কাশ্মীরি মেয়েদের বিয়ে করা নিয়ে এত হট্টগোল শুরু হলেও মূলত কাশ্মীরি কন্যাদের বাইরের রাজ্যে বিয়ে করা কখনোই নিষিদ্ধ ছিল না। বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা পাওয়া এই রাজ্যটির মেয়েরা তাদের রাজ্যের বাইরে সবসময়ই বিয়ে করতে পারতেন।
কিন্তু সেক্ষেত্রে বিয়ের পর তারা বঞ্চিত হতেন বাবার বাড়ির সব সম্পত্তির অধিকার থেকে। স্বায়ত্তশাসন বাতিলের পর জম্মু-কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষিত হওয়ায় সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার শর্তটি বাতিল হয়ে গেল। ফলে নিজের রাজ্যের বাইরে বিয়ে করলেও কাশ্মীরি মেয়েরা পিতৃসূত্রে সম্পত্তির উত্তরাধিকারিণী থাকবেন।
আর এ কারণেই রাজত্ব ও রাজকন্যার আশায় কাশ্মীরি মেয়েদের বিয়ে করার জন্য নতুন করে এত খোঁজখবর।
অবশ্য বিষয়টি নিয়ে ভারতের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের অনেকেই ব্যঙ্গবিদ্রুপও করছেন। অনেকে আবার সত্যি সত্যিই কাশ্মীরের মেয়েদের বিয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করছেন।