ফেব্রুয়ারি থেকেই ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধে ১ শতাংশ হারে ক্যাশ ব্যাক পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন কামাল কাদীর, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিকাশ।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথমবার বিকাশ অ্যাপ থেকে ভিসা ও অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধে নির্দিষ্ট পরিমাণ বিলে বাড়তি খরচ লাগবে না, উল্টো ১ শতাংশ হারে ক্যাশ ব্যাক পাওয়া যাবে।
এই অফারে একজন গ্রাহক কেবল একবার এবং সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক পেতে পারবেন। ফলে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধে বাড়তি খরচ লাগছে না।
গ্রাহকের বিকাশ অ্যাকাউন্টে ২ থেকে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে ক্যাশব্যাক পৌঁছে যাবে বলে জানানো হয়েছে।
এই অফারে শুধু বাংলাদেশি টাকায় যে কোনো পরিমাণের ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ করা যাবে।
মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস বিকাশ তাদের একাউন্ট টাকা জমালে ইন্টারেস্ট দিচ্ছে। বিকাশ একাউন্টে টাকা নিরাপদে রাখার পাশাপাশি টাকা জমিয়ে রাখলে বছরে সর্বোচ্চ ৪% পর্যন্ত ইন্টারেস্ট দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। বিকাশ অ্যাপে এ সংক্রান্ত দেয়া হয়েছে।
অ্যাপ থেকে জানা যায়, একাউন্টে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা থাকলে বাৎসরিক ১.৫% ইন্টারেস্ট, ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার পর্যন্ত ২%, ১৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার ৩%, ৫০ হাজার এর অধিক ৪% হারে ইন্টারেস্ট দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
কামাল কাদির একজন বাংলাদেশী-মার্কিন শিল্পোদ্যোক্তা। তিনি পরিচিত বাংলাদেশে প্রথম ই কমার্স প্রতিষ্ঠান সেলবাজার এবং মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশ এর প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে। ২০০৯ শালে টেড তাকে টেড ফেলো হিসাবে এবং তাকে ইয়ং গ্লোবাল লিডার হিসাবে ঘোষণা করে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম।
তিনি ওবেরলিন কলেজ থেকে বিএ এবং এমআইটি স্লোন স্কুল অব ম্যানেজমেন্ট এমবিএ করেন।
কামাল কাদির বাংলাদেশে ই কমার্সের সাথে সেলবাজার.কম দিয়ে পরিচিত করান। ৪০ লাখ গ্রাহক হওয়ার পর এটি টেলিনর কোম্পানির গ্রামীণফোন কর্তৃক অধিগ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে এটি এখানেই.কম নামে পরিবর্তিত হয়।
২০১১ তে শুরু হল বিকাশের বিকশিত হওয়ার গল্প! যার আনুষ্ঠানিক যাত্রা ২০১১ সালের ২১ জুলাই।
জন্ম লগ্নে পাওয়া বিকাশ নামটার রয়েছে পেছনের গল্প। ক্যাশ ও টাকা শব্দগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব পরিভাষা হয়ায় দেওয়া গেলনা সেসব নাম। কামাল কাদীর এবং অন্যরা এমন একটি নাম খুঁজছিলেন যেটা ইতিবাচক, মানুষ সহজে গ্রহন করবে, মনে রাখবে। সেখান থেকেই আজকের “বিকাশ” যার অর্থ বিকশিত হওয়া।
বিকাশের জন্ম হলো। ধীরে ধীরে বিকাশ বিকশিত হলো বা একটি স্বপ্ন বিকশিত হলো!
বর্তমানে কম খরচে দ্রুত প্রবাসীদের দেশে অর্থ পাঠানোর সুযোগ করে দিতে আন্তর্জাতিক রেমিটেন্স সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড রেমিটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক ও মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ।
এর ফলে বিশ্বের অর্ধ শতাধিক দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা কোন এজেন্ট বা এমটিও আউটলেটে না গিয়ে ওয়ার্ল্ড রেমিটের ওয়েব সাইট বা অ্যাপ ব্যবহার করে দেশে ব্র্যাক ব্যাংক বা বিকাশ একাউন্টে অর্থ পাঠাতে পারবেন।
এই সেবা দিতে মঙ্গলবার ওয়ার্ল্ড রেমিটের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে নতুন সেবা চালু করেছে প্রতিষ্ঠান দুটি। গুলশানের ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সমন্বিতভাবে রেমিটেন্সের এ সেবার উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিশ্বের ডিজিটাল মানি ট্রান্সফার কোম্পানি ওয়ার্ল্ড রেমিটের অ্যাপ এবং ওয়েবসাইট ব্যবহার করে বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশ থেকে ১৪৫টি দেশের রেমিটেন্স পাঠানো যায়।
বর্তমানে কাদির বিকাশ, মোবাইল ফোন ভিত্তিক অর্থ আদান প্রদানের একটি সার্ভিস এর প্রধান হিসাবে কাজ করছেন। বিকাশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ এবং সবচেয়ে দ্রুত বর্ধণশীল মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস কোম্পানি।
আপনার কেওয়াইসি ফরম বিকাশ কর্তৃক গৃহীত হতে হবে এবং আপনার একাউন্টটি একটিভ থাকতে হবে। মাসে কমপক্ষে আপনাকে ২টি আর্থিক লেনদেন (‘ক্যাশইন’, ‘ক্যাশআউট’, ‘এটিএম’ ক্যাশআউট’, ‘পেমেন্ট’, ‘সেন্ডমানি’ অথবা ‘মোবাইল রিচার্জ’) করতে হবে। মাসজুড়ে প্রতি দিনশেষে আপনার একাউন্টে কমপক্ষে ১ হাজার টাকা ব্যালেন্স থাকতে হবে।
মাসশেষে প্রতিদিনের গড় ব্যাল্যান্সের উপর আপনার প্রাপ্ত ইন্টারেস্টের পরিমান হিসাব করা হবে। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ভ্যাট এবং ট্যাক্স কর্তন সাপেক্ষ্যে বছরে দুই দফায় আপনার একাউন্টে ইন্টারেস্ট দেয়া হবে।
উপরোক্ত শর্ত পালনের মাধ্যমে সকল নতুন এবং পুরাতন বিকাশ কাস্টমাররা তাদের বিকাশ একাউন্টে ইন্টারেস্ট পাবেন। সেবাটি চালু করার জন্যে কিছুই করতে হবে না।
এদিকে বিকাশ অ্যাপের ওটিপি কোড নিয়ে গ্রাহকদের প্রতারণার দীর্ঘদিনের অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে এবার নতুন নিয়ম চালু করছে সংস্থাটি।
নতনু পদ্ধতির ফলে একাধিক ফোন থেকে বিকাশের একই ব্যবহারকারীর আইডি লগইন বন্ধ করা যাবে না। একটি একাউন্ট থেকেই এখন ট্রানজেকশন করতে পারবেন। ওটিপি পিন নাম্বার দিয়েও আর অন্য ডিভাইস থেকে একাউন্ট চালাতে পারবেন না। এর ফলে প্রতারকরা ওটিপি পিন নিয়ে কোন একাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে পারবে না।
বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী রয়েছে। ব্যাংকিং সেবা দেশের বেশিরভাগ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্যে দেশব্যাপী বিস্তৃত মোবাইল নেটওয়ার্ক একটি দ্রুত ও দক্ষ মাধ্যম হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এমন ধারণা থেকেই বাংলাদেশে বিকাশ পরিসেবার উৎপত্তি।
অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতই বাংলাদেশেও মানুষ গ্রামে পরিবারের ভরণপোষণের লক্ষ্যে কাজের জন্যে শহরমুখী হয়। এ ধরনের কর্মজীবিদের জন্যে সহজ ও সুবিধাজনক উপায়ে বাড়িতে টাকা পাঠানোর একটি ব্যবস্থা তৈরির করার প্রয়োজনীয়তা “বিকাশ” উদ্ভাবনের পেছনে একটি অন্যতম মৌলিক ধারণা হিসেবে কাজ করে।
এর মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের জন্যে ব্যাপক পরিসরে আর্থিক সেবা প্রদান সম্ভব হবে। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীকে সুবিধাজনক, সাশ্রয়ী, এবং নির্ভরযোগ্য সেবা প্রদানের মাধ্যমে অর্থনৈতিক কার্যকলাপের সাথে সম্পৃক্ত করা যাবে।
বিকাশ দ্রুত, নিরাপদ, সুবিধাজনক এবং সাশ্রয়ীভাবে আর্থিক সমাধান করে ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় আর্থিক নতুনত্বের মাধ্যমে মানুষকে ক্ষমতায়িত করেছে।
এরিমধ্যে বিকাশ পেয়েছেঃ
মন্থন পুরস্কার (বিজয়ী, ২০১৪)
কমঅ্যাওয়ার্ড ইন্টিগ্রেটেড ক্যাম্পেইন (সোনা, ২০১৬)
সেরা এমএফএস ব্র্যান্ড পুরস্কার (ব্র্যান্ড ফোরাম, ২০১৭)
এশিয়ার সেরা নিয়োগকারী ব্র্যান্ড পুরস্কার (এইচআর কংগ্রেস, ২০১৭)
২৩তম চেঞ্জ দ্যা ওয়ার্ল্ড পুরস্কার
গ্লোবাল ব্র্যান্ড এক্সিলেন্স পুরস্কার
নিলসন ক্যাম্পাস ট্র্যাক জরিপ (বি-স্কুল) ড্রিম এমপ্লয়ার পুরস্কার
আর্থিক খাতে সেরা উদ্ভাবন (বাংলাদেশ ইনোভেশন পুরস্কার, ২০১৮)
ব্র্যান্ড পুরস্কার (সেরা এবং নম্বর ওয়ান ফিনান্সিয়াল অ্যাপ্লিকেশন, এমএফএসে সেরা ব্র্যান্ড, ২০১৮ সবচেয়ে প্রিয় ব্র্যান্ডগুলির মধ্যে ৫ম)
ব্র্যান্ড পুরস্কার (এমএফএসে সেরা ব্র্যান্ড, ২০১৯, সবচেয়ে প্রিয় ব্র্যান্ডগুলির মধ্যে ১ম)।
বিকাশের গ্রাহক এখন প্রায় ৪ কোটি। কেমন করে এল এ সাফল্য। শুরুটাই–বা কেমন ছিল। সেই গল্পটাই গণমাধ্যমকে শুনিয়েছেন বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর।
কামাল কাদীর বাংলাদেশের সমান বয়সী। জন্ম একাত্তর সালের ৪ মার্চ। যুদ্ধ শুরু হওয়ার ঠিক ২২ দিন আগে। জন্মই সংঘাতময় একটি পরিবেশের মধ্যে। এরপরে স্বাধীন বাংলাদেশ আর কামাল কাদীরের বেড়ে ওঠাও একসঙ্গে। কারও পথই অবশ্য মসৃণ ছিল না। এরপরে অনেক এগিয়েছে বাংলাদেশ, কামাল কাদীরের বিকাশও হয়েছে এ সময়ে।
কামাল কাদীর বসেছিলেন স্বাধীনতা টাওয়ারের নিজস্ব অফিসে। এটাই ‘বিকাশ’–এর প্রধান কার্যালয়। মোবাইল আর্থিক সেবার সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান এই বিকাশ। সারা দেশে ছড়িয়ে আছে বিকাশ। মাত্র সাত বছরে বিকাশের এই উত্থান বিস্ময়কর। আর এই উত্থানের গল্পটাও চমকপ্রদ।
দশ ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট কামাল কাদীর। মাধ্যমিক পাস করার পরে কামাল কাদীর বৃত্তি নিয়ে পড়তে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। পড়তেন অর্থনীতিতে, পড়েছেন চিত্রকলাও।
পাস করার পরে দেশে ফিরেছিলেন ১৯৯৭ সালে, ছবির প্রদর্শনী করতে। তখনই পরিচয় হয় অক্সিডেন্টাল অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কোম্পানির বাংলাদেশের প্রধান নাইজেল হপকিনসনের সঙ্গে। দেশের মধ্যেই গবেষণার প্রস্তাব দিলেন তিনি। গ্যাসের চাহিদা কেমন, তা বের করার গবেষণায় সারা দেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন। তাঁর ভাষায়, এটা ছিল পুরো বাংলাদেশকে জানার ও বোঝার জন্য বিশাল এক সুযোগ।
টানা তিন বছর এ কাজ করলেন। এরই মধ্যে আমেরিকায় শুরু হয়েছে ডটকমের পালা। ভাবলাম, এমন কিছু করতে হবে, যেখানে গরিব মানুষটির অর্থের নিরাপত্তা আছে, কিন্তু খরচ কমবে অনেক। আবার একটা নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থাও থাকবে। কামাল কাদীর আবার পড়তে চলে গেলেন যুক্তরাষ্ট্রে। মাস্টার্স শেষ করে চাকরি শুরু করলেও মন বসল না। দেশে ফিরে এলেন ২০০৫ সালের ১৪ আগস্ট।
২০০৮ সাল থেকে নতুন উদ্যোগের পেছনে লেগে পড়লেন। ‘দেখলাম, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কেনাবেচা হলেও লেনদেন হচ্ছে নগদ টাকায়। আবার ব্যাংকে লেনদেনের খরচও অনেক। ব্যাংকের নিজস্ব অনেক ব্যয় থাকে, বেতন দিতে হয়, অফিস লাগে, আছে আরও নানাবিধ খরচ। একজন গরিব মানুষের গড় লেনদেন হয়তো হাজার-বারো শ টাকা। কিন্তু এই টাকা পাঠানোর যে খরচ, তা ব্যাংকের পোষাচ্ছে না। ভাবলাম, এমন কিছু করতে হবে, যেখানে গরিব মানুষটির অর্থের নিরাপত্তা আছে, কিন্তু খরচ কমবে অনেক। আবার একটা নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থাও থাকবে। এই ধারণা নিয়ে দেখা করলাম ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের সঙ্গে। ব্র্যাককে একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে চিন্তা করতে বললাম।’
আফ্রিকায় তখন মোবাইল আর্থিক সেবা চালু হয়ে গেছে। কামাল কাদীর সেখানে গিয়ে হাতে-কলমে কাজ দেখলেন। বসে থাকতেন বিভিন্ন দোকানের পাশে। দেখতেন কীভাবে কাজটি হচ্ছে, নিয়মকানুন কী, গ্রাহকেরা কী বলেন ইত্যাদি।
২০০৯ সাল। ক্ষমতায় আসা নতুন সরকার তখন প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নের দিকে নজর দিচ্ছে। এ সময়ি বিশেষ আগ্রহ দেখালেন বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমান। সব দিক থেকেই কাজ এগোল। বড় ভাই ও আরও দুজনকে নিয়ে কামাল কাদীর ‘মানি ও মোশন’ নামে একটি কোম্পানি করেছিলেন। যুক্ত হলো ব্র্যাক ব্যাংক। নীতিমালায় ছিল, একটা ব্যাংকের ৫১ শতাংশ মালিকানা থাকতে হবে, যাতে সমস্যা হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক হস্তক্ষেপ করতে পারে। আনুষ্ঠানিকভাবে বিকাশের শুরু ২০১১ সালের ২১ জুলাই।
নিজেদের মূলধনের বাইরে অনুদান পান বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন থেকে। পরে তারাই অংশীদার হয়ে যায়। বিনিয়োগ করে বিশ্বব্যাংকের সংস্থা আইএফসি। এর দীর্ঘ সাত বছর পরে ২০১৮ সালে একজন কৌশলগত অংশীদার হিসেবে যুক্ত হয় চীনের আলিবাবা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান অ্যান্ট ফিন্যান্সিয়াল।
বিকাশ বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ফোন ভিত্তিক টাকা স্থানান্তর (এমএফএস) সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। এটি বাংলাদেশের সবচাইতে বড় অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান। এটি ব্যাঙ্ক একাউন্টবিহীন ব্যক্তিদের আর্থিক সেবা প্রদানের লক্ষ্যে চালু করা হয়েছিল। গ্রাহকরা *২৪৭ # ডায়াল করে এবং বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে নগদ অর্থ ঢোকানো, নগদ অর্থ বের করা, টাকা পাঠানো, টাকা যোগ করা, রেমিট্যান্স, মোবাইল রিচার্জ, মূল্য প্রদান ও বিল দেয়া ইত্যাদি সেবাগুলো নিতে পারেন। বিকাশ একাউন্ট খুলতে একজন গ্রাহককে পুর্ণাঙ্গ তথ্য দিয়ে নির্ধারিত গ্রাহক নিবন্ধন ফর্ম (কেওয়াইসি) পূরণ করতে হয়।
বিকাশ আমেরিকার মানি ইন মোশন এলএলসি এবং ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ-এর যৌথ উদ্যোগ হিসাবে ২০১১ সালে শুরু হয়েছিল। এপ্রিল ২০১৩-তে, বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সদস্য, ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) বিকাশের ইক্যুইটি অংশীদার হয় এবং মার্চ ২০১৪-এ বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এর বিনিয়োগকারী হয়। এপ্রিল ২০১৮ সালে চীনের আলিবাবা গ্রুপের অঙ্গসংস্থা আলিপে’র আর্থিক প্রতিষ্ঠান এ্যান্ট ফিনান্সিয়াল বিকাশের ইক্যুইটি অংশীদার হয়। বিকাশ ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের সাবসিডিয়ারি হিসাবে কাজ করে এবং অন্যান্য ব্যাংক এবং অর্থায়ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করে।
বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে যে কোনও লেনদেন সহজ, দ্রুত করা যায়। অ্যাপ্লিকেশনটি গ্রাহকদের তাদের লেনদেনের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রদান করে। অ্যাপটি ব্যবহার করতে, গ্রাহকের একটি সক্রিয় বিকাশ অ্যাকাউন্ট এবং ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হয়। অ্যাপ্লিকেশনটি ভয়েস সহকারীর সেবা সহায়তায় ইংরেজি এবং বাংলা উভয় ভাষাতেই ব্যবহার করা যেতে পারে। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা এখন কিউআর কোড স্ক্যান করে দোকানে দাম চুকাতে পারবেন এবং অংশীদার ব্যাংকগুলি থেকে ওয়ালেটে অর্থ যোগ করতে পারবেন। অ্যাপটিতে বাংলা পাঠ্য এবং ভয়েস প্রম্পটের মতো ফিচারও রয়েছে, যা শারীরিক চ্যালেঞ্জ এবং অল্প শিক্ষিত ব্যবহারকারীদের পক্ষে সহায়ক হিসাবে কার্যকর হয়েছে। ২০১৯ সালে বিকাশ অ্যাপটি একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং নতুন ফিচার নিয়ে পুনরায় চালু করা হয়েছে
অংশীদার মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টগুলি থেকে গ্রাহকরা পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে সরাসরি অর্থ প্রদান করতে পারেন। গ্রাহকরা সাথে সাথে অনলাইন ব্যবসায়ীদের এবং রাইড শেয়ারিং সেবার বিল দেবার সুবিধা পান। তারা তাদের সুবিধাজনক সময়ে কয়েকটি সাধারণ ধাপে তাদের ইউটিলিটি বিলও পরিশোধ করতে পারেন। পে বিলে নতুন সংযোজন হিসেবে আছে ভিসা ক্রেডিট কার্ড বিল পেমেন্ট।
বাংলাদেশে অথবা পৃথিবীর যেকোন দেশেই সুযোগের অভাব হয়ত নেই কিন্তু সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে বা নিজ কষ্টে সুযোগ বানিয়ে সিঁড়ির বেশ কয়েকধাপ উপরে উঠতে পারে হাতে গোনা কিছু মানুষ। তেমনি একজন কামাল কাদীর।
বিকাশের বিস্তার এখন দেশব্যাপী। পরিবার থেকে দূরে থাকা অনেক গরিব মানুষের কাছে বিকাশ যেন তাদের জীবনেরই অংশ। আর এটাই কামাল কাদীরের সার্থকতা।