সিলেট থেকে: বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। আকাশ মেঘলা থাকলেও বৃষ্টি নামেনি বাংলাদেশ-উইন্ডিজ ম্যাচ চলাকালীন সময়ে। তবে ক্যারিবীয়দের চার-ছক্কার বৃষ্টি ঠিকই নামল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে। শাই হোপের ২৩ বলে ৫৫ রানের ইনিংসে বাংলাদেশের দেয়া ১৩০ লক্ষ্যটা হয়ে গেল মামুলি।
টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ হারের পর ৮ উইকেটের দাপুটে জয়ে টি-টুয়েন্টি সিরিজ শুরু করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১০.৫ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা পৌঁছে যায় গন্তব্যে।
ওয়ানডে সিরিজে ব্যাক-টু-ব্যাক সেঞ্চুরি হাঁকানো শাই হোপ এদিনও ভয়ঙ্কর হয়ে জ্বললেন। ১৬ বলে ৬টি ছক্কা ও ৩ চারে পূর্ণ করেন ফিফটি। মোস্তাফিজুর রহমানের বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ দিয়ে যখন ফেরেন, দলের রান তখন একশর কাছে (৯৮)।
নিকোলাস পুরান ২৩ ও কিমো পল ২৯ রানে অপরাজিত থেকে ছোট সংস্করণের ম্যাচটা আরও ছোট করে ফেলেন।
হোপের সঙ্গে এভিন লুইসের ওপেনিং জুটিতে আসে ৫১ রান। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে লংঅনে আরিফুল হকের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন লুইস। এ বাঁহাতি করে যান ১১ বলে ১৮ রান।
শুরুতে ১৯ বলে ৫০ রান। উইন্ডিজ ওপেনারদের ১২ মিনিটের ওই ঝড়টাই ছিল ম্যাচ জয়ের জন্য যথেষ্ট।
আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিল দেখেছেন সাকিব। বিরুদ্ধ স্রোতে দাঁড়িয়ে ৪৩ বলে ৬১ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন অধিনায়ক। তার একার লড়াইয়ে উইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টুয়েন্টিতে ১২৯ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুর তিন ব্যাটসম্যানই আউট হন একই লেন্থের বলে। ক্যারিবীয় পেসারদের ছোড়া বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে একে একে উইকেট বিলিয়ে আসেন তামিম ইকবাল (৫), লিটন দাস (৬), সৌম্য সরকার (৫)।
শুরুর ব্যাটিং দেখে ধন্দে পড়ার মতো অবস্থা, টি-টেন হচ্ছে না তো! ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় দর্শকরা গ্যালারিতে জমে বসার আগে শেষ হয়ে যায় টাইগার টপঅর্ডার।
খানিকপরই মুশফিকুর রহিম (৫) রোভম্যান পাওয়েলের সরাসরি থ্রো-তে হন রানআউট। পাওয়ার-প্লে শেষ হওয়ার আগেই টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে হারায় বাংলাদেশ। দলের রান তখন ৪৮।
ফিফটি হওয়ার আগেই চার উইকেট হারানোয় পরিস্থিতির দাবী আসে জুটি গড়ার। সাকিবের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পঞ্চম উইকেট জুটিতে আসে ২৫ রান। শুরু থেকেই দারুণ বোলিং করে যাওয়া শেলডন কটরেলের তৃতীয় শিকার হন মাহমুদউল্লাহ। করেন ১২ রান।
আরিফুল হকের সঙ্গে আরেকটি জুটি হয় সাকিবের। দলের রান তিনঅঙ্ক পার করে আরিফুল (১৭) ফিরলে ভাঙে ৩০ রানের জুটি। বাংলাদেশের ইনিংসে যেটি সবচেয়ে বড় জুটি।
অন্যদের আসা-যাওয়া দেখলেও সাকিব লড়ে যান নিজস্ব ঢংয়ে। ম্যাচের ১৬তম ওভারের শেষ বলে ক্যারিবিয়ান বাঁহাতি স্পিনার অ্যালেন ফাবিয়ানকে মিডউইকেট দিয়ে বিশাল ছক্কায় পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের অষ্টম ফিফটি। খেলেন ৪০ বল।
বাংলাদেশের ইনিংসে ওটিই প্রথম ছক্কা। সাকিব আউট হওয়ার আগে মারেন আরেকটি। টাইগার ইনিংসে আর কেউ পারেননি ছক্কা হাঁকাতে। এ বাঁহাতির ৮ চার ও দুই ছক্কার ইনিংস থামে ১৮তম ওভারে।
মেহেদী হাসান মিরাজ ৮ ও মোস্তাফিজুর রহমান রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরলে এক ওভার আগেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
কটরেল চারটি ও কিমো পল নিয়েছেন দুটি উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন ওশানে টমাস, ফাবিয়ান ও অধিনায়ক কার্লোস ব্র্যাথওয়েট।