মানহানির একটি মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় ব্যারিস্টার মইনুলকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে বলে চ্যানেল আই অনলাইনকে জানিয়েছেন ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার জাহিদুল আলম।
জেলার বলেন,‘তাকে সাধারণ ওয়ার্ডে সাধারণ বন্দিদের মতো রাখা হবে।’
এর আগে দুপুরে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুলকে আদালতে হাজির করা হয়। এসময় শুনানি শেষে ঢাকার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম কায়সারুল ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জামিন নাকচের পর আদালত প্রাঙ্গনে মইনুল হোসেনের পক্ষে আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, যখন গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন আপনারা মামলা করেন আমরা দেখব, তখনই রংপুরে মামলা করা হল আর সন্ধ্যায় তাকে গ্রেপ্তার করা হল। সেই গ্রেপ্তারের কারণে আজ মইনুল হোসেনকে কোর্টে নিয়ে আসা হয়েছে।
‘মামলা রংপুরে হয়েছে, এই মামলায় যে সেকশন দেয়া হয়েছে তা জামিন যোগ্য মামলা। উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জামিন যোগ্য ধারায় জামিন দিতে হয়, কিন্তু আজকে আমরা জামিন পাই নাই, জামিন নামঞ্জুর করা হয়েছে। আমরা মনে করি জামিন যোগ্য ধারায় জামিন না দেওয়া সম্পূর্ণ বেআইনি এবং আইন বিরোধী। ’
তিনি বলেন, তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়াসহ মইনুল হোসেনের পরিবার সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত। এছাড়াও তিনি আইজীবী, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি। আজ একমাত্র দলীয় ও রাজনৈতিক কারণে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে জামিন পেল না। এতে করে মইনুল হোসেন ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা জামিনের ব্যাপারে উচ্চ আদালতে যাব এছাড়াও প্রয়োজন হলে রংপুর গিয়ে মামলার জামিন চাইব।
অপরদিকে মাসুদা ভাট্টির আইনজীবী নজিবুল্লাহ হিরু বলেন, মইনুল যে বক্তব্য দিয়েছেন তার দ্বারা পুরো নারী জাতি কলঙ্কিত হয়েছেন। মামলাটি জামিনযোগ্য ধারায় হলেও সার্বিক বিবেচনায় তার জামিন নামঞ্জুর করা হোক। এ ছাড়াও মামলাটি রংপুরের হওয়ায় রংপুরে শুনানি হওয়ায়ই ভাল।
রংপুরে করা মানহানির এক মামলায় সোমবার (২২ অক্টোবর) রাত পৌনে ১০টার দিকে রাজধানীর উত্তরায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসা থেকে মইনুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
এরপর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
টেলিভিশন টকশো’তে নারীর প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগে রংপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিলি মায়া বেগম নামে এক নারী মানহানির মামলা করেন ব্যারিস্টার মইনুলের বিরুদ্ধে। ওই মামলায় বিচারক আরিফা ইয়াসমিন মুক্তা তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন।
গত ১৬ অক্টোবর আলোচনার ফাঁকে মাসুদা ভাট্টির প্রশ্ন ছিল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি আলোচনা চলছে, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ঐক্যফ্রন্টে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব করছেন কিনা?
এর জবাবে ব্যারিস্টার মইনুল বলেন, ‘আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি চরিত্রহীন বলে আমি মনে করতে চাই।’
এরপর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়াসহ সব জায়গায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি মামলাও হয়।
দেশের অর্ধশতাধিক সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক মইনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দেন।