Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

কেমন আছেন জিমন্যাস্টিকসের দিকপাল খুশী?

বাংলাদেশের প্রথম জিমন্যাস্ট খুরশিদা আকতার খুশী (ডানে) বাঁয়ে তার সময়কার এক জুডো খেলোয়াড়

চুল সাদা হয়েছে বেশ আগে। গড়ন আগের মতোই হালকা-পাতলা। ১৯৯৫ সালে মিরপুরে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার পর থেকে বাঁ-চোখে দেখেন না। সত্তর দশকে দাপিয়ে বেড়ানো দেশের প্রথম নারী জিমন্যাস্ট খুরশিদা আকতার খুশী শারীরিকভাবেও কিছুটা দুর্বল। বৃহস্পতিবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অডিটোরিয়ামে পাক্ষিক ‘ক্রীড়াজগত’র ৪০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে আসলেন তার সময়কার দুই নারী ক্রীড়াবিদের কাঁধে ভর করে।

অডিটোরিয়ামের গেট থেকে হেঁটে গিয়ে নির্ধারিত আসনে যতক্ষণে বসলেন, কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামেরা এগিয়ে গেল তাকে অনুসরণ করে। এরপর শুরু হলো সাক্ষাতকার পর্ব। কাউকে নিরাশ করলেন না। উপস্থিত সব সংবাদমাধ্যমকে একক সাক্ষাতকার দিলেন জিমন্যাস্টে দেশের প্রথম তারকা।

‘ক্রীড়াজগতে’র প্রথম সংখ্যার প্রচ্ছদকন্যা হয়েছিলেন খুশী। চার দশক আগের সেই স্মৃতি মনে করে এখনও উদ্বেলিত হন সাবেক এই জিমন্যাস্ট, ‘ম্যাগাজিনের জন্য আমার ছবিটি তোলেন আলোকচিত্রী শামসুল ইসলাম আলমাজী। জিমন্যাস্টের পোশাক পরে ব্যাল্যান্স বিমের ভঙ্গিমায় আমার ছবিটি তোলা হয়। তখনকার সমাজব্যবস্থায় এটি ছিল সাহসী ছবি।’

দৌড়, জিমন্যাস্টিকস শেষ করে জুডোতে এসে পান জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার। ১৯৭৩ থেকে ১৯৮১, আট বছর খেলেছেন জিমন্যাস্টিকস। এই খেলাটি যখন শুরু করলেন তখন এসএসসির ছাত্রী খুশী। ১৫-১৬ বছরের কিশোরী।

তখনকার সমাজ ব্যবস্থায় একজন কিশোরীর জন্য এ খেলা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হওয়ার কথা। কিন্তু অতটা কঠিন হয়নি খুশীর বেলায়, ‘খুব একটা প্রতিবন্ধকতা তখন ছিল না। বাসা থেকে সমর্থন পেয়েছি সব সময়। বিয়ের পর উৎসাহ পাই স্বামীর কাছ থেকে। ও তো নিজেও জিমন্যাস্ট। তখনকার সাংবাদিক ভাইদের কাছ থেকেও উৎসাহ পেয়েছি। ক্রীড়াঙ্গনে তখনকার সময়ে খুব আনন্দ ছিল। খেলা মানেই জিতবো…। এই ছিল আমাদের শক্তি।’

খেলোয়াড়ি জীবন নিয়ে কোনও আক্ষেপ নেই খুশীর। ভাগ্যবান মনে করেন একটি খেলার দিকপাল হতে পেরে, ‘খুব আনন্দের মধ্যে আমরা খেলেছি। সবাই সবার জন্য। পারিবারিক পরিবেশে খেলেছি। আমি এসেছি বলেই অনেক মেয়েরা আসতে পেরেছে। এটা বিরাট একটা জিনিস। নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়।’

খুশী স্বপ্ন দেখেন, ‘প্রতিটা খেলায় আমাদের ছেলেমেয়েরা অনেক অনেক ভালো করুক। বিদেশে যাক, পদক নিয়ে আসুক, দেশের সম্মান বাড়ুক। দেশের সম্মান বাড়ানোর জন্য খেলাধুলা সবচেয়ে সহজ পথ। এর চেয়ে সোজা পথ কিন্তু আর নেই।’

 

 

বিস্তারিত ভিডিওতে:

Exit mobile version