বুধবার দুপুরে মৃত্যু বরণ করেন ছোট পর্দার দাপুটে অভিনেতা সালেহ আহমেদ। ২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল তার প্রয়াণ হলেও বিগত প্রায় আট বছর ধরে তাকে অভিনয় করতে দেখা যায়নি। এক সময়ের সহঅভিনেতাদের সাথেও ছিলো না তার যোগাযোগ। যাকে এক সময় নিয়মিত নাটকে পাওয়া যেত, তিনি কেন অভিনয় ছাড়লেন, কেন সঙ্গ ছাড়লেন? কোন্ অভিমানে এতোদিন আড়ালে ছিলেন এই অভিনেতা?
এসব প্রশ্নের উত্তর জানতেই গেল বছর যোগাযোগ করা হয়েছিলো সালেহ আহমেদের স্ত্রীর সঙ্গে। চ্যানেল আই অনলাইনে তখন ‘সালেহ আহমেদ: কেনো অন্তরালে ছোট পর্দার এই বড় তারা?’-শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। যে প্রতিবেদনে উঠে আসে সালেহ আহমেদের অন্তরালে যাওয়ার খবর।
২০১১ সালে ব্রেন স্ট্রোক করেন সালেহ আহমেদ। এরপর থেকেই চুপ হয়ে যান এই অভিনেতা। তখন থেকেই মূলত পরিচিত গণ্ডিতে তার যাতায়াত কমতে থাকে। ছোট পর্দার মানুষের সাথে বাড়তে থাকে তার দূরত্ব। তবে সবচেয়ে বড় ধাক্কা লাগে প্রিয় নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুতে। ২০১২ সালে নির্মাণের মহান এই কারিগরের মৃত্যুতে মনে মনে সিদ্ধান্তই নিয়ে নেন, আর অভিনয় নয়!
মূলত, হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর অভিনয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন সালেহ আহমেদ। কারণ তার হাত ধরেই অভিনয়ে নাম লিখিয়ে ছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালে অবসরে যাওয়ার পর হুমায়ূন আহমেদের নাটকে ও চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। ধারাবাহিক ‘অয়োময়’ নাটক এবং ‘আগুনের পরশমণি’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয় জগতে তার দাপুটে পদচারণা শুরু হয়েছিলো। এরপর অসংখ্য টিভি নাটক এবং চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
এরপর দিনকে দিন একা হয়ে যেতে থাকেন সালেহ আহমেদ। সেই সাথে বার্ধক্য তাকে ঝাঁপটে ধরে। এরপর চলাফেরা তো দূরের কথা, ঠিকমতো উঠে বসতে পারাও কষ্টদায়ক ছিলো তার জন্য। এর পাশাপাশি তার ফুসফুস প্রদাহজনিত সমস্যাসহ বাত সমস্যা ছিলো নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। শেষ পর্যন্ত সকল সমস্যার উর্ধ্বে গুণী এই অভিনেতা।
তার মৃত্যুতে শোবিজ অঙ্গনের মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া। সোশাল মিডিয়ায় তাকে স্মরণ করে স্মৃতিচারণও শুরু করেছেন কেউ কেউ। অনেকে বলতে শুরু করেছেন, হুমায়ূন আহমেদের নাটকের জনপ্রিয় অভিনেতা আবুল খায়ের, খালেদ খান, চ্যালেঞ্জারদের দলে ভিড়লেন সালেহ আহমেদ।