Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

করোনার কারণে অভাবনীয় ক্ষতিতে ৬১ কোটি শিশু: ইউনিসেফ

করোনা মহামারীর কারণে প্রায় ২ বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে পুরোপুরি বা আংশিকভাবে প্রভাবিত হয়েছে ৬১ কোটি ৬ লাখের বেশি শিশু।

জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক তহবিল ইউনিসেফের এক জরিপে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস এবং কোভিড-১৯ মহামারীর দ্বিতীয় বছরে পদার্পণের মুহুর্তে ইউনিসেফ তাদের জরিপে শিশুদের শিক্ষায় কোভিড-১৯ এর প্রভাব তুলে ধরেছে।

ইউনিসেফের শিক্ষা প্রধান রবার্ট জেনকিন্স বলেন, মহামারীর এই দুই বছরে শিশুদের পড়ালেখায় অভাবনীয় ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি এখনই থামানো দরকার এবং এর জন্য শুধু স্কুল খুলে দেওয়াই যথেষ্ট নয়। তাদের এই ক্ষতিপূরণে নিবিড় সহায়তা প্রয়োজন। এছাড়া স্কুলগুলোকে নিজস্ব গণ্ডিতে আবদ্ধ না থেকে কাজ করতে হবে শিশুদের শারীরীক এবং মানসিক অগ্রগতি, সামাজিক উন্নতি এবং পুষ্টি বৃদ্ধির জন্য।

ইউনিসেফ জানায়, স্কুল বন্ধের কারণে শিশুরা তাদের গণনা এবং সাক্ষরতার সাধারণ দক্ষতাও হারিয়ে ফেলেছে। বিশ্বব্যাপী শিক্ষাক্ষেত্রে যে ব্যাঘাত ঘটেছে তার ফলে লাখ লাখ শিশু তাদের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার্জন থেকে পিছিয়ে পড়েছে। অল্প বয়সী এবং প্রান্তিক শিশুদের ক্ষেত্রে এই হার আরও বেশি।

নিম্ন এবং মধ্য আয়ের দেশগুলোতে, স্কুল বন্ধ থাকার কারণে ১০ বছরের শিশুদের ৭০ শতাংশই সাধারণ পাঠ পড়তে কিংবা বুঝতে পারার সক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি, যা মহামারীর আগের সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৫৩ শতাংশ।

ইথিওপিয়ায় দেখা যায়, প্রাথমিক স্কুলের শিশুরা স্বাভাবিক শিক্ষাবর্ষে যে পরিমাণ গণিত শিখতে পারতো তার মাত্র ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ গণিত শিখেছে তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়া, কলোরাডো, নর্থ ক্যারোলিনা, ওহিও, ভির্জিনিয়া এবং ম্যারিল্যান্ডের মতো অঙ্গরাজ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে শিশুদের ক্ষতি পরিলক্ষিত হয়েছে। যেমন টেক্সাসে ২০২১ সালে গ্রেড ৩ এর দুই-তৃতীয়াংশ শিশু গণিতে ফলাফল করেছে গ্রেড স্তরের নিচে। ২০১৯ সালে এই হার ছিল অর্ধেক।

এছাড়া ব্রাজিল এবং সাউথ আফ্রিকায়ও দেখা গেছে ফলাফলের ক্ষেত্রে শিশুরা পিছিয়ে গেছে অন্যান্য বছরের তুলনায়।

যেহেতু এখনো স্কুল বন্ধ চলমান রয়েছে, এর ফলে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য, প্রতিদিনের পুষ্টিকর খাদ্য এবং তাদের নির্যাতনের হার বেড়ে যাচ্ছে।
ইউনিসেফের তথ্যমতে, কোভিড-১৯ শিশু এবং তরুণদের মধ্যে উচ্চ হারের উদ্বিগ্নতা এবং বিষন্নতাবোধ সৃষ্টি করেছে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, মেয়ে, তরুণ-তরুণী এবং যারা গ্রামে বসবাস করে তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাগুলো বেশি দেখা যায়।

স্কুল বন্ধের কারণে ৩৭ কোটির বেশি শিশু স্কুলের খাবার থেকে বঞ্চিত হয়। কিছু শিশুর কাছে এই খাবারই দৈনিক খাদ্য এবং পুষ্টির একমাত্র নির্ভরযোগ্য উৎস।

Exit mobile version