কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে অনলাইনে মন্ত্রীদের গরু কেনার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করল ‘ডিজিটাল হাট’।
শনিবার দুপুরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে কোরবানীর পশু বিক্রির অনলাইন প্লাটফর্ম ‘ডিজিটাল হাট’ (www.digitalhaat.net) উদ্বোধন করা হয়।
করোনা সংক্রমণ মোকাবেলায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, আইসিটি ডিভিশন, ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ডেইরী ফার্ম এসোসিয়েশন যৌথভাবে এই ডিজিটাল হাট বাস্তবায়ন করছে।
ক্রেতারা চাইলে ডিজিটাল হাট থেকে ন্যায্যমূল্যে ক্রয়কৃত কোরবানীর পশু ঢাকার ৫টি এলাকা থেকে মাংস প্রক্রিয়াকরণ করে নিজ নিজ ঠিকানায় ডেলিভারী নিতে পারবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ.ম. রেজাউল করিম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, বিভাগীয় কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান, এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম ও বাংলাদেশ ডেইরী ফার্ম এসোসিয়েশন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ইমরান হোসেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন: ডিজিটাল কোরবানী হাটের এই উদ্যোগ শত সমস্যার মাঝেও আমাদের আশান্বিত করেছে। অনলাইনে কোরবানীর গরু বিক্রি এবং প্রযুক্তিগত ব্যবস্থাপনার মধ্য মাংস প্রক্রিয়া করে বাসায় পৌঁছে দেয়ার এই কর্মযজ্ঞ একদিকে কোভিডের ঝুঁকি থেকে আমাদের রক্ষা করবে অন্যদিকে নগরীর পরিবেশকে সুন্দর রাখবে এবং চামড়া ব্যবস্থাপনা হবে আধুনিক ও মানসম্মত। পুরো ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমাদের ব্যবহারিক জীবনে তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগের ক্ষেত্রে আমরা একধাপ এগিয়ে যাব।
ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন: গত কয়েক দিনের কয়েকটি টিমের নিরবিচ্ছিন্ন পরিশ্রমের ফসল আজকের এই ডিজিটাল হাট। ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত গরু হাটগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এবং শহরের পাশঘেঁষে কয়েকটা মাত্র হাটে গরু বিক্রি করা হবে।
তিনি নগরবাসীকে গরু হাটে যতটা সম্ভব কম যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন: আমরা ডিজিটাল হাটের আওতায় গরু বিক্রি ছাড়াও প্রায় ২ হাজার গরু জবাই করে এবং মাংস প্রক্রিয়া করে বাসায় পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা রেখেছি। মূলত ঈদের দিন ৪০০, দ্বিতীয় দিন ১০০০ এবং তৃতীয়দিন ৬০০ গরু প্রস্তুত করার সক্ষমতা রয়েছে।
অনলাইনে কোরবানীর গরু কেনাকাটা করে কেউ যেন প্রতারিত না হয় এবং করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ঘরে বসে কোরবানীর ব্যবস্থাপনা সেবা সহজ করতে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, আইসিটি বিভাগ এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)।
আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে স্বচ্ছতার জায়গা নিশ্চিত করে ডিজিটাল হাট প্লাটফর্মের মাধ্যমে পশু কেনাকাটা এবং ঢাকার পাঁচটি জায়গায় ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় হাজারো পশু কোরবানির ব্যবস্থা করে মাংস হোম ডেলিভারিসহ বিভিন্ন সেবা অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
ডিজিটাল হাটের উদ্বোধনের এক পর্যায়ে অতিথিরা বিভিন্ন ডিজিটাল হাট প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে বিভিন্ন অনলাইন শপ থেকে কোরবানীর পশু ক্রয় করেন। প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার মন্ত্রী গরু ক্রয় করেন অনলাইনশপ দারাজ থেকে। মৎস্য ও প্রাণীসম্পদমন্ত্রী অনলাইনে গরু কেনেন আজকের ডিল থেকে। বাণিজ্যমন্ত্রী গরু কিনবেন সাদিক এগ্রো থেকে। বিভাগীয় কমিশনার গরু কিনবেন একটি বাড়ি একটি খামার থেকে, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী তার পছন্দের গরু অনলাইনে ক্রয় করেন একশপ থেকে, সাংসদ সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি তার পছন্দের গরু সব্জিবাজার ডট কম অনলাইন শপ থেকে কেনার আয়োজন সম্পন্ন করেন। তারা গরুকেনার পাশাপাশি ডিজিটাল হাটের স্লটারিং সেবার জন্যও তাদের নাম নিবন্ধন করেছেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ, মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলাল উদ্দীন আহমেদ, ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর এ মিশুক, ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল, দারাজ এর এমডি সৈয়দ মোস্তাহিদল হক উপস্থিত ছিলেন।