গাজীপুরের শ্রীপুরে এমপি বাবার পক্ষে জাতীয় সংসদের লোগো সংবলিত গাড়ি ব্যবহার করে স্থানীয় মাদ্রাসা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন গাজীপুর-৩ আসনের আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট রহমত আলীর ছেলে জামিল হাসান দূর্জয়।
গত ৮ সেপ্টেম্বর রহমত আলীর পক্ষ থেকে স্থানীয় একটি ফাজিল মাদ্রাসার একাডেমিক ভবনের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন করেন দূর্জয়। ভিত্তিপ্রস্তরের নিজের নামটিও যোগ করে দেন তিনি। ওই ভিত্তিপ্রস্তরের নামফলক নিয়ে গত বেশ কিছুদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে নানা সমালোচনা।
ফলকে লেখা আছে:
বরামা ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা, শ্রীপুর, গাজীপুর
চার তলা ভিত বিশিষ্ট একতলা একাডেমিক ভবনের ভিত্তি প্রস্তুর স্থাপন করেন-
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সফল মন্ত্রী
আলহাজ অ্যাডভোকেট মো. রহমত আলী
মাননীয় সংসদ সদস্য, গাজীপুর-০৩
উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটি
পক্ষে জনাব আলহাজ অ্যাড. মো. জামিল হাসান দূর্জয়
সভাপতি, শ্রীপুর মুত্তিযোদ্ধা রহমত আলী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পরিচালনা পরিষদ
প্রকল্পের নাম: সেকেন্ডারি এজুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইসিপ)
বাস্তবায়নে: শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর
তারিখ : ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮
অনেকেই নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে এমপিপুত্রের নামযুক্ত ফলকের ছবি পোস্ট করে সমালোচনামূলক স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। গাজীপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রহিম সরকার তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন: ‘এই ফলকটি দেখে কি ভাবব? এও কি সম্ভব? আরো কত কি যে দেখব আল্লাহই জানে।’
আরেকজন লিখেছেন: ‘এইভাবে আরো কতদিন চলিবে? সব কাজকর্মে সাংসদ পিতার পক্ষে পুত্ররা, তাহলে আমাদের সাধারণ মানুষের হিমশিম খেতে হয়। প্রকৃত সাংসদ কে? পিতা না পুত্রেরা, আমার মনে হয় এই দেশে যদি এমনই কোন আইন থাকিত যে, পিতার পক্ষেই পুত্রেরা ভারপ্রাপ্ত সাংসদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, তাহলে গাজীপুর-৩ শ্রীপুরের সাংসদ পুত্র ইহাই করিতেন – এমনকি করিতেছেন।’
শ্রীপুরের বরামা ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আশপাশের সাধারণ মানুষের মধ্যেও এই নিয়ে চাপা ক্ষোভ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের অনেকের অভিযোগ, এমপি অ্যাডভোকেট মো. রহমত আলীকে কত বছর ধরে এলাকায় দেখা যায় না তার হিসেব নেই। বহুদিন ধরে তার ছেলে দূর্জয় এবং জাহাঙ্গীর সিরাজীই এমপির জন্য নির্ধারিত সব কাজ করে থাকেন।
নানা কারণে এর আগেও এই এমপিপুত্র কয়েকবার সমালোচিত হয়েছেন। এখন মাদ্রাসার ভিত্তিপ্রস্তরেও দূর্জয়ের নাম দেখে মেনে নেয়াটা কষ্টকর বলে মন্তব্য করেছেন কয়েকজন।