নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলায় ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য (এমপি) মুজিবর রহমান (নিক্সন) চৌধুরীকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারোয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থিত হয়ে আগাম জামিন চাইলে আদালত নিক্সন চৌধুরীকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। তবে আদালত তার আদেশে বলেছেন, এই মামলা তদন্তের ক্ষেত্রে সাক্ষীদের প্রভাবিত করা যাবে না। স্থানীয় প্রশাসনকে কোনো ধরনের ভয়ভীতি দেখানো যাবে না। এবং তদন্ত কর্মকর্তাকে জামিন আবেদনকারী (নিক্সন চৌধুরী) সব ধরনের সহযোগিতা করবেন।
আদালতে নিক্সন চৌধুরীর জামিনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক ও আইনজীবী মনজুর আলম। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জান্নাতুল ফেরদৌসী।
গত মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেন: ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসককে (ডিসি) হুমকি ও নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের গালিগালাজ করার অভিযোগে নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এরপর গত বৃহস্পতিবার ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা নওয়াবুল ইসলাম নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা করেন। সেই মামলায় গত ১৮ অক্টোবর হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন নিক্সন চৌধুরী।
নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে হওয়া মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১০ অক্টোবর চরভদ্রাসন উপজেলার উপনির্বাচনে কেন্দ্রভিত্তিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত করায় জেলা প্রশাসক অতুল সরকারকে ফোন করে কৈফিয়ত দাবি করেন সাংসদ নিক্সন। তার সমর্থিত প্রার্থী পরাজিত হলে মহাসড়ক অবরোধ করার ‘হুমকি’ দেন এবং ‘অশোভন আচরণ’ করেন।
সেই সাথে নির্বাচনের দিন একটি ভোট কেন্দ্রের বুথের সামনে জাল ভোট দেওয়া ও ধূমপান করার সময় একজন পোলিং এজেন্টকে আটকের পর চরভদ্রাসনের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ভাঙ্গার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে সাংসদ ‘অত্যন্ত অশালীন ভাষায় গালিগালাজ, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং হুমকি’ দেন।
একজন সংসদ সদস্য হয়েও নির্বাচনী এলাকায় উপস্থিত থেকে নির্বাচনের প্রচারে অংশগ্রহণ করে এবং দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের ‘গালিগালাজ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে’ নিক্সন চৌধুরী নির্বাচনী বিধিমালা লঙ্ঘন করেছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।