বাংলা চলচ্চিত্রের গানের জন্যই নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন কিংবদন্তী সুরকার, সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী। পেয়েছিলেন লাখো ভক্ত স্রোতার ভালোবাসা। চলচ্চিত্রের পরিচালক, প্রযোজক ও গান গাওয়া বহু সহকর্মীদের সঙ্গে এরআগে অসংখ্যবার এসেছিলেন এফডিসিতে। প্রাণ ভরে আড্ডাও দিতেন এফডিসির কোনো ঘুপচিতে বসে! দীর্ঘদিন পর সোমবার দুপুরেও তিনি এফডিসি এলেন, তবে আগের আসা আর আজকের আসার মধ্যে যোজন যোজন ফারাক!
হ্যাঁ, নিথর দেহে শেষবারের মতো এফডিসিতে এলেন বাংলা গানের এই সুরস্রষ্ঠা। লাশবাহী গাড়িতে চড়ে সোমবার দুপুর ২টার পর এফডিসিতে প্রবেশ করেন তিনি। এসময় এফডিসিতে বিভিন্ন সমিতির নেতাদের পক্ষে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে বিদায় দেয়া হয়।
এরপর তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। সেখানে শিল্পীর ঘনিষ্ঠজন ও সংগীতের কিছু মানুষের উপস্থিতিতে সমাহিত করা হয় তাকে।
এরআগে সোমবার (১০ আগস্ট) সকালে প্রথমে তার মৃতদেহ বনশ্রীর বাসায় নেওয়া হয়। সেখানে বিটিভির সহকর্মীবৃন্দ ও এলাকাবাসীর জন্য তাকে রাখা হয় সকাল সাড়ে ১১টা থেকে ১২টা অবধি। এরপর নেওয়া হয় খিলগাঁওয়ে আলাউদ্দিন আলির আদি বাড়িতে। সেখানে তাকে শেষবার দেখেন শিল্পীর স্বজনরা।
বাদ যোহর খিলগাঁও তালতলা মোড়ে নূর-এ-বাগ জামে মসজিদে জানাজা শেষে তাকে নিয়ে আসা হয় এফডিসিতে।
রবিবার (৯ আগস্ট) বিকাল ৫টা ৫০ মিনিট নাগাদ রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কিংবদন্তী সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী। তার মৃত্যুর খবরে শোক নেমে আসে দেশের সংগীতাঙ্গনে।
৫ হাজারেরও বেশি গানে সুর করা এ সংগীত ব্যক্তিত্ব আলাউদ্দিন আলী অসংখ্য সম্মাননা ছাড়াও আটবার জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেছেন। তার তৈরি করা কালজয়ী কিছু গান হচ্ছে: ও আমার বাংলা মা তোর, সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি ও আমার বাংলাদেশ, বন্ধু তিন দিন তোর বাড়ি গেলাম দেখা পাইলাম না, যেটুকু সময় তুমি থাকো কাছে, মনে হয় এ দেহে প্রাণ আছে, প্রথম বাংলাদেশ, আমার শেষ বাংলাদেশ, এমনও তো প্রেম হয়, চোখের জলে কথা কয়, আছেন আমার মুক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার, জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো, ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়।