ওয়ানডে, টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ, বহুজাতিক ওয়ানডে কিংবা দ্বিপাক্ষিক টেস্ট সিরিজ অয়োজনের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের জন্য নতুন নয়। আয়োজনের সাফল্যের সেই মুকুটে যোগ হচ্ছে নতুন কিছু। শারীরিক প্রতিবন্ধীদের বহুজাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট প্রথম আয়োজনের কৃতিত্ব লাল-সবুজের।
ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইংল্যান্ড আর স্বাগতিক বাংলাদেশের অংশগ্রহণে শারীরিক প্রতিবন্ধী ক্রিকেট টুর্নামেন্টের পর্দা উঠছে বুধবার। হোম অফ ক্রিকেটে উদ্ধোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে নয়দিনের এই ক্রিকেট উৎসব।
মঙ্গলবার অংশগ্রহণকারী পাঁচ দেশের অধিনায়কের হাতে চ্যাম্পিয়নের ট্রফি আর আয়োজক বাংলাদেশের লাল-সবুজ জার্সি উন্মোচন দিয়ে হলো টুর্নামেন্টের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ।
আন্তর্জাতিক রেডক্রস, বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, বিসিবি ও বিকেএসপি’র যৌথ আয়োজনে এই টুর্নামেন্ট। ক্রিকেটের মাধ্যমে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সমাজের মূলধারায় সম্পৃত্ত করার অঙ্গীকার।
সে কথার প্রতিধ্বনি বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক রেডক্রসের হেড অফ ডেলিগেশন ক্রিস্টিনে কিপোলার কণ্ঠে, ‘বাংলাদেশের শারীরিক প্রতিবন্ধী ক্রিকেট দল গঠনের স্বপ্নের শুরু ২০১৩ সালে। মাত্র দু’বছরে সেই স্বপ্ন সফল হয়েছে। এটাই প্রথম নয়, এরকম টুর্নামেন্ট ভবিষ্যতে আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। সবার মনে রাখা উচিত শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ব্যক্তি বা সমাজের বোঝা নয়, মূল্যবান সম্পদ।’
প্রাত্যহিক জীবন-যুদ্ধে লড়াকুদের পাশে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা । স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে টুর্নামেন্টের ব্র্যান্ড অ্যামবাসেডর ‘নড়াইল-এক্সপ্রেস’ জানালেন এই মহতী উদ্যোগে তার সমর্থন থাকবে সবসময়।
শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি বহুজাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের স্বপ্ন দেখেছিলেন ইয়ান মার্টিন। ইংল্যান্ডের ক্লাব ক্রিকেট খেলা মার্টিন ২২ বছর বয়সে বংশগত সমস্যার কারণে হারান হাত ও পায়ের কর্মক্ষমতা। সাত বছর ছিলেন মাঠের বাইরে । এরপর হুইল চেয়ারে চড়েই ফেরেন ক্রিকেট মাঠে ।
ইংলিশ এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের হেড অফ ডিসঅ্যাবিলিটি ক্রিকেট হিসাবে দায়িত্ব পালন করা মার্টিন গত নভেম্বরে বাংলাদেশ সফরে এসে টুর্নামেন্ট আয়োজনে তার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেন।
অদম্য মার্টিনের আশা ভবিষ্যতে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশ্বকাপের আয়োজনও হবে,‘বেঁচে থাকার জন্য আমাদের একটাই মন্ত্র, স্রোতের বিরুদ্ধে সাঁতার কেটে এগিয়ে যাওয়া। আমাদের কোনো বিকল্প নেই, হতাশাও নেই। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা, ধর্ম, বর্ণ বিদ্বেষ কিংবা জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কে কি ভাবলো সেটা তার নিজের সমস্যা, আমাদের বা সমাজের সমস্যা নয়। ’
আইসিসি এই টুর্নামেন্ট পর্যবেক্ষণের জন্য পাঠাচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম’কে। উদ্বোধনী ম্যাচ বাদে ফাইনালসহ বাকি ম্যাচ হবে বিকেএসপি’তে।
তবে ১০ সেপ্টেম্বর ফাইনাল মিরপুরের হোম অফ ক্রিকেটে আয়োজনের কথা বিবেচনা করছে বিসিবি।