Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

‘এই মুহূর্তে সানির সমকক্ষ কেউ নেই’

ফাইল ছবি

বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর পরীক্ষা দিয়ে বৈধতা পেলেও অনেকেই আর স্বরূপে ফিরতে পারেন না। যারা ব্যতিক্রম, তাদের একজন আরাফাত সানি। বাঁহাতি এই স্পিনার নতুন অ্যাকশনে আগের চেয়েও ধারাল হয়ে ফিরেছেন। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম দোলেশ্বরের হয়ে ১৫ ম্যাচে ৩৪ উইকেট নিয়ে দলকে রানার্সআপ করতে ভূমিকা রেখেছেন। দলটির কোচ মনে করছেন, এই মুহূর্তে সানির সমকক্ষ কোন পারফর্মারও নেই।

লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি সানি চ্যানেল আই অনলাইনকে বললেন, ‘নতুন অ্যাকশনে সুবিধাই হয়েছে। আগের চেয়ে টার্ন বেশি পাচ্ছি। বল আগের চেয়ে বেশি ঘুরছে। বাকি সব আগের মতোই আছে।’

জাতীয় দলে বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাকের অভাব পূরণ হয়নি এখনো। এক সাকিব আল হাসানেই ভরসা। সাকিব ফর্ম হারালে পুষিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সাকিবের যোগ্য সঙ্গীর অভাবে দল প্রায়ই ভুগছে। টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে দলে নেই সানি। এসময়টাতে সাকলাইন সজীব, মোশাররফ হোসেন, সাঞ্জামুল ইসলামকে দিয়ে চেষ্টা করে সফল হয়নি বিসিবি। লিগে জ্বলে ওঠার পর তাই আবারো আলোচনায় সানি।

নতুন অ্যাকশনে সানির বোলিং দেখে মুগ্ধ প্রাইম দোলেশ্বরের কোচ মিজানুর রহমান বাবুলও। তার বিশ্বাস, সানি যদি ব্যক্তিগত ঝামেলায় না পড়তেন এবং অনুশীলনে আরো বেশি সময় দিতে পারতেন, তবে এবারের লিগে তার উইকেট আরো বেশি হত।

‘এ বছর যতটা দেখেছি সানি যদি স্বাভাবিক অবস্থায় থাকত, মানসিকভাবে ঠিক থাকত, প্রয়োজনীয় অনুশীলন করতে পারত; তাহলে লিগে যত উইকেট পেয়েছে তার চেয়ে ১০-১২টা উইকেট বেশিই পেত। তার ছন্দ থেকে অন্তত তাই মনে হচ্ছে।’

স্ত্রী দাবি করা এক তরুণীর করা দুটি মামলায় ৫৩ দিন জেলহাজতে কাটিয়েছেন সানি। জামিনে বের হয়েই লিগে খেলতে নামেন। প্রথম ম্যাচেই পাঁচ উইকেট। মাত্র এক ম্যাচে উইকেটের দেখা পাননি। সেরা বোলিং ৫৬ রানে ৬ উইকেট।

হাজতে থাকার কারণে ঠিক মতো অনুশীলন করতে পারেননি। ফিটনেসেও তৈরি হয়েছিল ঘাটতি। এসব সীমাবদ্ধতা জয় করে সানি দেখিয়েছেন তার সামর্থ্য, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে তিনি আগের চেয়েও ধারাল।

এক যুগ ঢাকা লিগে খেলে ২০১৪ সালে জাতীয় দলে আসেন সানি। বাংলাদেশের হয়ে ১৬টি ওয়ানডে ও ১০টি টি-টুয়েন্টি ম্যাচ খেলা এই বোলার জাতীয় দল থেকে পারফরম্যান্সের কারণে বাদ পড়েননি। গত বছর টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় তার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরে দীর্ঘ পুনর্বাসনের পর অ্যাকশনের বৈধতা ফিরে পেয়েছেন। কিন্তু জাতীয় দলে ফেরা হয়নি এখনো।

সানি অবশ্য আশাও ছাড়েননি, ‘একটা প্রবলেমের জন্য (অবৈধ বোলিং অ্যাকশন) আমি দলে নেই। এখন ঘরোয়া ক্রিকেটে যদি পারফর্ম করি, ভালো করে যেতে থাকি, তাহলে অবশ্যই ফিরতে পারব। নির্বাচকরাও তখন আমাকে নিয়ে ভাববেন।’

কোচ বাবুলও মনে করছেন সানিকে জাতীয় দলে ফেরানোর সময় এসে গেছে, ‘উইকেটটেকিং বোলার হিসেবে এ মুহূর্তে সানির সমকক্ষ কাউকে দেখছি না। বিশেষ করে ওয়ানডে ও টি-টুয়েন্টিতে তাকে বিবেচনা করার সময় এসেছে। সে পারফর্ম করছে। সানি এখন দলে ফেরার দাবি করতেই পারে। বাকিটা বোর্ড ও নির্বাচকদের ব্যাপার।’

প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু চ্যানেল আই অনলাইনকে জানালেন, সানিকে নিয়ে তারাও ভাবছেন। পরের ক্যাম্পেই হয়তো বা ডাকা হতে পারে। ক্যাম্পের পারফরম্যান্স দিয়েই মূল্যায়ন করা হবে বলে জানালেন নান্নু।

‘লিগে কে কেমন করল তার কিন্তু সেভাবে মনিটরিং নেই। ক্যাম্পে না আসা পর্যন্ত বলা মুশকিল নতুন অ্যাকশনে কেমন করল। তারপরও তাকে নিয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। তার সামর্থ্য ও অভিজ্ঞতা নিয়ে কারও সন্দেহ নেই। তবে ভয় আছে আবার যদি অ্যাকশনের কারণে অভিযুক্ত হয়। সবকিছু বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সামনের ক্যাম্পেই হয়তো ডাকা হবে তাকে।’

Exit mobile version