গত দুই সপ্তাহ ধরে একে একে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের জন্য ১৫ সদস্যের দল দিয়েছে অংশ নিতে যাওয়া দেশগুলো। তাতে পূরণ হতে যাচ্ছে কারও বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন, কারও পুড়েছে কপাল।
প্রতিটি দল ঘোষণা পর হৈচৈ হয়েছে, রব উঠেছে এমন কাউকে না কাউকে নিয়ে, যাদের বাদ পড়ায় বিভক্ত হয়েছে সেই দেশটির ক্রিকেটপ্রেমী থেকে বোদ্ধারা পর্যন্ত। এই বাদ পড়া খেলোয়াড়দের মধ্যে কয়জন বিশ্বকাপ খেলার সামর্থ্য রাখতেন, কাদের দলে রাখা উচিত ছিল, এমনসব প্রশ্ন রেখে ভোটের আয়োজন করেছিল ক্রিকেটসাইট ক্রিকইনফো। ভোটে ভক্তরাই ঠিক করে দিয়েছেন চাইলে বাদ পড়া কাদের নিয়ে আস্ত একটা বিশ্বকাপ দলই গড়ে ফেলা সম্ভব।
ভোটের হিসাবে সবচেয়ে এগিয়ে রিশভ পান্ট। ফর্মে থাকা ভারতীয় উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের পক্ষে ৩৬,২০০ জন ভোট দিয়ে জানিয়েছেন, তাকে বাদ দিয়ে মোটেও ভালো কাজ করেননি ভারতীয় নির্বাচকরা। কেবলমাত্র ভক্তরাই নন, ভারতীয় গ্রেট সৌরভ গাঙ্গুলিও বলছেন পস্তাতে হতে পারে কোহলিদের। কারণ মহেন্দ্র সিং ধোনির যোগ্য উত্তরসূরি হওয়ার সব উপাদান যার মাঝে, তাকে বিশ্বকাপ দলে না রাখাটা ভীষণরকম অগ্রহণযোগ্য!
পান্টের মতো আম্বাতি রাইডুর বাদ পড়াটাও এক বিস্ময়! ৫৫ ম্যাচে ৪৭ গড়ধারী এই ব্যাটসম্যান বিশ্বকাপ দলে ডাক পাননি কেবল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ কয়েকম্যাচে খারাপ করায়। রাইডুর জায়গায় সেই সিরিজে ভালো করে ঠিকই বাজিমাত করেছেন উদীয়মান বিজয় শঙ্কর।
ভোটে পান্ট এগিয়ে থাকলেও শতকরা বিবেচনায় আবার এগিয়ে সাউথ আফ্রিকান অলরাউন্ডার ক্রিস মরিস। ৬২ শতাংশ ভোটার মনে করেন, চোকারখ্যাত প্রোটিয়াদের বিশ্বকাপে অভিজ্ঞতা দিয়ে শক্তি বাড়াতে পারতেন বর্তমানে আইপিএলে ব্যস্ত এ অলরাউন্ডার।
আশ্চর্যজনক যে, ৫৭ শতাংশ ভোটার মনে করেন জফরা আর্চারকে দলে রাখা উচিত ছিল স্বাগতিক ইংল্যান্ডের। মাত্রই দেশটির নাগরিকত্ব পাওয়া এ ক্যারিবীয় পেসারের আন্তর্জাতিক আঙ্গিনায় এখন পর্যন্ত পা-ই পড়েনি। তাকে বিশ্বকাপ দলে রাখেনি ইংলিশরা। আর্চারের বিশ্বকাপ স্বপ্ন যে একেবারেই ধূলিসাৎ হয়ে গেছে এমনও নয়। পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে খেলবেন। সেখানে ভালো করলে মিললেও মিলতে পারে বিশ্বকাপের টিকিট।
পিটার হ্যান্ডসকম্ব ও মোহাম্মদ আমিরকেও বাদ পড়া খেলোয়াড়দের শীর্ষে রেখেছেন ভোটাররা। স্টিভেন স্মিথকে দলে জায়গা করে দিতে ফর্মে থাকা সত্ত্বেও বাদ পড়েছেন অজি ব্যাটসম্যান হ্যান্ডসকম্ব। আর অভিজ্ঞ পেসার আমিরকে পাকিস্তান দলে রাখেনি অফফর্মের কারণে। ২০১৭ সালে পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিজয়ী নায়কের গত বছরটা গেছে যাচ্ছেতাই। দুহাতে রান বিলিয়ে মাত্র ৬ উইকেট পাওয়া আমিরের বাদ পড়াটা অনেকটা অবধারিতই ছিল!
দুই অলরাউন্ডার সুনিল নারিন ও কাইরেন পোলার্ডকে ভিন্ন দুই কারণে দলে রাখেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ড। ২০১৬ সালের পর ওয়ানডেই খেলেননি পোলার্ড। বিশ্বকাপ দল ঘোষণার আগে বোর্ড আয়োজিত ঘরোয়া টুর্নামেন্টেও নজর কাড়তে পারেননি। চলতি আইপিএলে ভালো খেললেও নির্বাচকদের মন গলেনি তাতে। আর অনেকটা বাধ্য হয়েই নারিনকে ছাড়া দল দিয়েছেন নির্বাচকরা। ডান হাতের মাঝের আঙুলে চোট আছে ক্যারিবীয় স্পিনারের। বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেলেও পুরো ১০ ওভার বল করতে পারবেন কিনা নারিন, সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
নিরোশান ডিকেভেল্লা ও দিনেশ চান্দিমাল– দুই ব্যাটসম্যানকে ফর্মের কারণে বাদ দিয়েছেন শ্রীলঙ্কান নির্বাচকরা। কিন্তু ১৫ সদস্যের দলে যারা ডাক পেয়েছেন তাদের অনেককে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যাদের অনেকেই শেষ ওয়ানডে খেলেছেন দুই বছর আগে!
জশ হ্যাজেলউড কেনো বিশ্বকাপ খেলছেন না তার জবাব ঠিক করা আছে অস্ট্রেলীয় নির্বাচকদের। তাদের চাওয়া বিশ্বকাপের চেয়ে যেন অ্যাশেজেই বেশি মন দিতে পারেন অজি পেসার, সেজন্য তাকে বিশ্রাম দেয়া হয়েছে। অজিদের বিশ্বকাপ দলে পেসারের অভাব খুব একটা নেইও!