সোমবার (২৩ জানুয়ারি) থেকে পাঁচ দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহ-২০১৭ শুরু হচ্ছে। প্রতিবারের মতো এবারও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং আনন্দমুখর পরিবেশে পুলিশ সপ্তাহ অনুষ্ঠিত হবে বলে পুলিশের এক সংবাদ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
এবারের পুলিশ সপ্তাহের মূল প্রতিপাদ্য ‘জঙ্গি মাদকের প্রতিকার, বাংলাদেশ পুলিশের অঙ্গীকার’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সপ্তাহের প্রথম দিন সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে বর্ণাঢ্য পুলিশ প্যারেডের মধ্যদিয়ে পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন। এসময় তিনি পুলিশের ১০টি কন্টিনজেন্ট এবং পতাকাবাহীদলের নয়নাভিরাম প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করবেন।
এ উপলক্ষে ২০১৬ সালে পুলিশ বাহিনীর সদস্যগণের অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২৬ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম), ৪১ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)’ প্রদান করা হবে।
এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদ্ঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ২৪ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-সেবা’ এবং ৪১ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা’ প্রদান করা হবে। প্রধানমন্ত্রী তাদেরকে পদক প্রদান করবেন।
প্রধানমন্ত্রী পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, সিআইডি’র ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি, সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেন্টার, সাইবার ট্রেনিং সেন্টার এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের ভাস্কর্য ‘রাজারবাগ-৭১’ উদ্বোধন করবেন। তিনি পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক)-এর স্টল পরিদর্শন করবেন। পরে প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সদস্যদের সাথে কল্যাণ প্যারেডে অংশগ্রহণ করবেন।
পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং মহা-পুলিশ পরিদর্শক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, ‘দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শতাব্দীর ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানটি জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা বিধান, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়তাসহ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ‘শৃঙ্খলা-নিরাপত্তা-প্রগতি’ এ মন্ত্রে দীক্ষিত দেশপ্রেমিক পুলিশ সদস্যগণ তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে আরও নিষ্ঠাবান ও আন্তরিক হবেন।’
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ‘জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও স্থানীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ পুলিশের দক্ষতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। দেশের সকল প্রয়োজন ও সঙ্কটকালে পুলিশ জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধানে নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের পুলিশ বাহিনীর সাফল্য ও গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা বাংলাদেশকে বিশ্ব পরিমন্ডলে অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে।’
পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে জাতীয় দৈনিক পত্রিকাসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন ও বেতার চ্যানেলসমূহ পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে।
পুলিশ সপ্তাহে বিগত এক বছরের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে পরবর্তী বছরের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়। আগামী ২৭ জানুয়ারি শুক্রবার আইন-শৃঙ্খলা ও অপরাধ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভার মধ্যদিয়ে পুলিশ সপ্তাহ শেষ হবে।