ধ্বংসস্তুপের মাঝে আলো জ্বালালেন ইমরুল কায়েস। সেঞ্চুরির ল্যান্ডমার্কে পৌঁছাতেই জ্বলে উঠল হোম অব ক্রিকেটে আসা হাজারো দর্শকের মোবাইলের ফ্ল্যাশ। উদযাপনও হল বিশেষ। তিনঅঙ্ক ছুঁয়ে পরে হলেন আরও বিধ্বংসী। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে এ বাঁহাতি ওপেনারের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৭১ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি।
শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের ৩ নম্বর উইকেটে অসমান বাউন্স, মুভমেন্ট, টার্ন, সুইং সবই দেখা গেছে। তার মধ্যেই ইমরুল থাকলেন সাবলীল। খেললেন ১৪৪ রানের অনবদ্য ইনিংস। ১৪০ বলের ইনিংসে ১৩টি চার ও ৬টি ছয়ের মার।
বাংলাদেশের ইনিসের গোড়াপত্তন করা ইমরুল যখন আউট হন, তখনও ৮ বল বাকি। আর ১১ রান করতে পারলেই ছাড়িয়ে যেতে পারতেন ২০০৯ সালে করা তামিম ইকবালের ১৫৪ রানের দেশিয় রেকর্ড। সেটিই ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ব্যক্তিগত সেরা ইনিংস। ইমরুলেরটি অবশ্য যৌথভাবে দ্বিতীয়। এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মুশফিক খেলেছিলেন ১৪৪ রানের অপরাজিত ইনিংস।
শুরুতেই লিটনের উইকেট হারিয়ে হোঁচট খাওয়া বাংলাদেশ বাকি পথ পাড়ি দেয় ইমরুলের ব্যাটে। সপ্তম উইকেটে সাইফউদ্দিনকে নিয়ে রেকর্ড জুটি গড়েন এ ওপেনার। তাদের ১২৭ রানের জুটি বদলে দেয় সব। এর আগে সপ্তম উইকেটে জুটির শতরান ছাড়ানোরই অভিজ্ঞতা হয়নি টাইগারদের।
ক্যারিয়ারের চতুর্থ ওয়ানডে খেলতে নামা সাউফউদ্দিন খেলেন ৬৯ বলে ৫০ রানের ইনিংস। শেষ ৭ ওভারে বাংলাদেশ তোলে ৭১ রান।
এশিয়া কাপে ওপেনিং জুটির ভঙ্গুর অবস্থার দেখা মেলে এদিনও। ফাইনালে স্বীকৃত ওপেনারের জায়গায় নেমে পড়েছিলেন মিরাজ। লিটন দাসের সঙ্গে জুটিতে আসে ১২০ রান। পরের ম্যাচেই আবার আগের জায়গায় ফিরে গেল বাংলাদেশ।
শুরুতে জীবন পাওয়া লিটন দৃষ্টিকটুভাবে আউট হন ৪ রান করে। ডানহাতি পেসার টেন্ডাই চাতারাকে উইকেট দেন। দলের রান তখন ১৬। অভিষিক্ত ফজলে মাহমুদ রাব্বি আউট হন রানের খাতা খোলার আগেই। ১৯ রানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে স্বাগতিকরা।
প্রতিরোধ গড়েন মুশফিক ও ইমরুল। তাদের ৪৯ রানের জুটি ভাঙে লেগস্পিনার মাভুতার বলে। লেগস্টাম্পের বাইরের বল স্কয়ারে খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটরক্ষকের হাতে। ২০ বলে ১৫ রান ইনিংস থামে মুশফিকের।
৬৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশের ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব ভালোই সামলাতে থাকেন ইমরুল ও মিঠুন। ৭৪ বলে ৭১ রানের জুটি এনে দেন তারা। ভাল সংগ্রহের ভিত আসে। মিঠুন করেন যান ৩৭ রান। তবে মিডলঅর্ডারে মাহমুদউল্লাহ ও মিরাজের দ্রুত বিদায়ে কক্ষপথ হারাতে বসেছিল টাইগাররা।
২ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারালে স্কোরবোর্ডের চেহারা হয়ে যায় জীর্ন, ১৩৯/৬। পেস-অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিনকে নিয়ে ইমরুলের লড়াই শুরু সেখান থেকেই। সপ্তম উইকেট জুটিতে তারা লড়ে গেছেন অনবদ্যভাবে।
দারুণ বোলিং করেছেন জিম্বাবুইয়ান পেসার কাইল জার্ভিস। ৯ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। চাতারা নেন দুই উইকেট। একটি উইকেট নিয়েছেন মাভুতা।