আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন এক ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানতে পেরেছি, সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) বর্তমান সংসদে পাস না হলেও অধ্যাদেশের মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা সম্ভব বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল এবং একজন নির্বাচন কমিশনারের আপত্তির মুখেই গত ৩০ আগস্ট একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের বিধান রেখে আরপিও সংশোধনের প্রস্তাব চূড়ান্ত করে ইসি। অন্যদিকে, জাতীয় নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য দেড় লাখ ইভিএম কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। বাংলাদেশে ২০১০ সাল থেকে বিভিন্ন নির্বাচনে নির্দিষ্ট কিছু কেন্দ্রে ব্যবহারের মাধ্যমে এই ইভিএম নিয়ে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু হয়। সর্বশেষ বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সীমিতভাবে ইভিএম ব্যবহার করে নির্বাচন কমিশন।
এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, প্রযুক্তির যুগে এই পদ্ধতি ব্যবহার না করার কোন বিকল্প নেই।
ইভিএম ব্যবহারের জন্য সংসদে বিল পাস না হলেও নির্বাচন কমিশন এবারের জাতীয় নির্বাচনে এই ভোটিং মেশিন ব্যবহারের যে ইঙ্গিত দিয়েছে তাতে নানা প্রশ্ন উঠছে। এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা জাতীয় নির্বাচনে কতটা ইতিবাচক হবে সেটা ভাবার বিষয়। আমরা একটি অবিতর্কিত সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বলে আশা করি। ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই মেশিন ব্যবহারে আপত্তি জানিয়েছে। কিন্তু সরকারি দল ও নির্বাচন কমিশন আনেক আগে থেকেই ইভিএম মেশিন ব্যবহারের কথা বলে আসছে। বিষয়টির পূর্ণাঙ্গ সুরাহা না করে জাতীয় নির্বাচনে এই ভোটিং মেশিন ব্যবহার করা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে বলে আমরা মনে করি। কিছু প্রশ্নের স্বচ্ছ উত্তর না পেলে জনগণের কাছে সামান্য একটি ব্যাপার বড় ও বিতর্কিত হয়ে দেখা দিতে পারে।