দিনাজপুরে ফসলি জমির ওপর গড়ে উঠছে ইটভাটা। জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি কেটে ইটভাটায় ব্যবহার করায় ব্যাহত হচ্ছে ফসল আবাদ। বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে কৃষি ও পরিবেশ।
দিনাজপুরে আবাদি জমি ও বনাঞ্চলের মধ্যে গড়ে উঠেছে ছোট বড় প্রায় একশ’ ৬৩টি ইটভাটা। জমির উপরিভাগের মাটি ইট তৈরিতে ব্যবহার করায় জমির খাদ্যকণা ও জৈব উপাদান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জমির উপরিভাগ কাটার ফলে নিচু হয়ে যাচ্ছে জমি।
কোনো কোনো কৃষক মাত্র ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা বিঘায় আবাদি জমি বিক্রি করছে ভাটা মালিকদের কাছে। ইটভাটায় কর্মরত একজন শ্রমিক বলেন, জমির মালিকরা ১৫-২০ হাজার করে টাকা পাচ্ছে। তবে টাকার পরিমান নির্ভর করে গভীরতার উপর।
কৃষি বিভাগ জানায়, প্রতিটি ইটভাটা এক মৌসুমে ৩০ লাখ ইট উৎপাদন করে থাকে। সে হিসেবে দিনাজপুরে প্রায় একশ’ ৬৩টি ভাটার কাজে ব্যবহারের জন্য বছরে দুই থেকে আড়াই হাজার একর জমির মাটি ব্যবহার হচ্ছে।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক গোলাম মোস্তফা বলেন, কৃষক ভাইদের এটা জানাতে হবে যে জমির উপরিভাগেই উদ্ভিদের সব ধরনের খাদ্য উপাদান থাকে। এভাবে আবাদি জমির মাটি সরিয়ে ফেললে পুরো কৃষি সমস্যায় পড়বে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, জমির উপরিভাগের মাটি কেটে ফেলা হলে আগামী ২০ বছরেও সেই জমির জৈব পদার্থের ঘাটতি পূরণ হবে না।হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর শাহাদাত হোসেন খান বলেন, জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নেওয়ায় যেসব উপাদান চলে যায়, এটা খুবই ক্ষতিকর।
ইটভাটার জন্য আবাদী জমির মাটি ব্যবহার বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।