Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী ফেসবুক

Advertisements

ফেসবুক এখন আমাদের জীবনের সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িত। ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে প্রায় সবাই এখন ফেসবুকের আকাশী নীল জগতে আবদ্ধ। নানা ইতিবাচক দিকের পাশাপাশি এর নেতিবাচক দিকের সংখ্যাও কম নয়।

অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় বাস্তব জীবনের ব্যক্তির সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যক্তির আকাশ-পাতাল তফাৎ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যক্তি যতটা বহির্মুখী, বাস্তবে ঠিক ততটাই অন্তর্মুখী। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে প্রায়ই ভুল বোঝাবুঝি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। অনেকে আবার জ্ঞানশূন্য হওয়া সত্ত্বেও প্রায় প্রতিটি ট্রেন্ডিং ইস্যু নিয়েই জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য জানিয়ে দেন, যে ব্যাপারে হয়তো তার কোনো জ্ঞানই নেই। ফলে গুজব, ভুল ব্যাখ্যাসহ নানা মিসইনফরমেশন সমাজে ছড়িয়ে পড়ে, যার ভুক্তভোগী দিনশেষে হয় সমাজই।

এছাড়াও ফেসবুক ব্যবহার করে বিভিন্ন মতবাদ ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। ফেসবুক যেহেতু ফিল্টার বাবলের মধ্যে দিয়ে ফেসবুক ব্যবহারকারীদেরকে আটকে রাখার চেষ্টা করে, ফলে ফেসবুক একজন ব্যবহারকারীর সামনে ঠিক সে ধরনের কন্টেন্টই আনতে থাকে, যা তার মতাদর্শের সাথে খাপ খায়। ফলে ব্যক্তি মনে করতে থাকে যে তার মতাদর্শই সঠিক, অন্য মতাদর্শের প্রভাব সম্পর্কে ন্যুনতম জ্ঞান না রেখে। ফলে ভিন্ন মতাদর্শকে শ্রদ্ধা বা সম্মান রাখার চর্চা দিনদিন কমে আসছে, আর ক্রমেই সমাজে পোলারাইজেশন ঘটছে এবং সহিষ্ণুতা কমছে।

এছাড়াও ফেসবুকে মিম, ফানি ভিডিও কিংবা সারফেস লেভেলের বিনোদন নিয়ে পড়ে থাকায় মানুষের মধ্যে গভীর চিন্তা-ভাবনা করার ক্ষমতা কমে আসছে। অ্যাটেনশন স্প্যান কমে যাওয়ায় মানুষ তাদের মনোযোগ ধরে রাখতে পারছে না, যা আদতে সামগ্রিক সমাজকেই ক্ষতি করছে।  রাজনীতি-অর্থনীতি থেকে শুরু অন্যান্য গভীরতর বিষয় সম্পর্কে জানাশোনা না থাকায় ব্যক্তিত্বের ওপরেও সেই ছাপ পড়ে।

কেবল এগুলোই নয়, ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার চেষ্টা, অন্যদের তুলনায় রিঅ্যাকশন কম পাওয়ায় মানসিক অসন্তুষ্টি, অন্যদের ফেসবুকে শেয়ার করা ছবি দেখে তাদের বাস্তব জীবন ও সোশ্যাল মিডিয়ার জীবন এক করে ফেলে হতাশায় ডুবে যাওয়াসহ নানা ক্ষতিকারক দিক রয়েছে।

যোগাযোগ অনেক সহজ ও সস্তা করার পাশাপাশি ব্যবসা করার সুযোগ তৈরিসহ নানা ইতিবাচক দিক থাকলেও সামগ্রিক সমাজের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ফেসবুকের যে নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে, তাকে উপেক্ষা করা যায় না।

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)

Exit mobile version