Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

আবারও দেশবাসীকে পাশে চান সাংবাদিক প্রবীর সিকদার

এক মন্ত্রীকে মানহানীর অভিযোগে ৫৭ ধারায় দায়েরকৃত মামলায় আগামীকাল সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে হাজিরা দেবেন সাংবাদিক প্রবীর সিকদার। ফরিদপুরে দায়ের হওয়া এই মামলায় ইতোমধ্যে প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ।

অভিযোগের ধরণ অনুযায়ী মামলাটি ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়েছে। ৫৭ ধারায় গ্রেফতারের পর দেশে-বিদেশে তীব্র প্রতিবাদের মুখে জামিন পাওয়া সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের প্রত্যাশা এবারও দেশবাসী তার সঙ্গেই থাকবে।

আজ ফেসবুকে স্ট্যাটাসে সাংবাদিক প্রবীর সিকদার লিখেছেন, “আগামী কাল ২৫ মে বুধবার ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে আমার হাজিরা। ফরিদপুরে আমার বিরুদ্ধে এক মন্ত্রীর মানহানির অভিযোগ এনে ৫৭ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন সরকারি উকিল স্বপন পাল। ওই মামলায় গত আগস্টে আমাকে একদফা গ্রেফতার ও পুলিশি নির্যাতন করা হয়। সেই সাথে আমাকে কারাবরণও করতে হয়। দেশে ও বিদেশে তীব্র প্রতিবাদের মুখে আমাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। সেই মামলায় ফরিদপুর পুলিশ গত মাসে চার্জশিট দাখিল করলে মামলাটি ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। কাল সেই আদালতে আমাকে হাজির হতে হবে। আমি হৃদয় দিয়ে অনুভব করি, সারাদেশের মানুষ আমার পাশেই আছেন।”

দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এক পা হারানো সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে ‘ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা’ এবং সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানোর পরিণতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন সাংবাদিক ও শিক্ষক মাসকাওয়াথ আহসান।

প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা খারিজ চেয়ে জনমানুষের পক্ষে আদালতের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি। সাংবাদিক ও শিক্ষক মাসকাওয়াথ আহসান আদালতের কাছে পেশ করা এই আর্জি ফেসবুকের মাধ্যমে জনসমক্ষে প্রকাশ করেছেন ।

মাসকাওয়াথ তার আবেদনের এক জায়গায় লিখেছেন, ‘মাননীয় আদালত, ক্ষমতা কাঠামোর পুতুল নাচের ইতিকথায় নির্যাতিতের পাশে নির্যাতিতরাই দাঁড়ায়। সাংবাদিক প্রবীর সিকদার তাই ফরিদপুরের নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়ালে; তাকে ব্যক্তিগত প্রতিহিংসায় ৫৭ ধারার অগণতান্ত্রিক ও বিতর্কিত মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হয়। দুদিন কারাবাসের পর জনমানুষের দাবীর চাপে সাংবাদিক প্রবীর সিকদার জামিন পেলেও; মামলাটি চলতে থাকে। অভিযোগ দায়ের হয় তার বিরুদ্ধে। কিন্তু প্রভাবশালীর ব্যক্তিগত প্রতিহিংসায় মামলার চার্জশীটের কপি তোলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন সাংবাদিক সিকদার। মামলাটি ঢাকার সাইবার আদালতে স্থানান্তর হয়েছে। আশা রাখি এই আদালত প্রভাবশালীদের ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই মামলা থেকে সাংবাদিক প্রবীর সিকদারকে রেহাই দেবেন’।

গত বছরের ১৬ অগাস্ট ফরিদপুরে সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে এলজিআরডি মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের মানহানির অভিযোগ এনে ৫৭ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন সরকারি উকিল স্বপন পাল। ওই মামলায় ওইদিনই তাকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে ফরিদপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। ফরিদপুরে কোতোয়ালি থানায় ১৭ আগস্ট দিনভর চোখ বেঁধে এবং হাতকড়া পরিয়ে পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। ওইদিন সন্ধ্যায় তাকে ফরিদপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

১৮ আগস্ট ফরিদপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার জামিনের আবেদন বাতিল করেন এবং পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দেশে ও বিদেশে তীব্র প্রতিবাদের মুখে রিমান্ডে না নিয়েই ১৯ অগাস্ট সাংবাদিক প্রবীর সিকদারকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়।

Exit mobile version