একটা সময় মারদাঙ্গা নায়ক হিসেবে পর্দা কাঁপিয়েছেন বলিউডের ‘অ্যাংরি ইয়ং ম্যান’ অমিতাভ বচ্চন। আবার রোমান্টিক নায়কের চরিত্রেও দারুণ মানিয়ে যেতেন তিনি। বয়সের সাথে সাথে নায়ক চরিত্রের বদলে বেছে নিয়েছেন নানা বৈচিত্র্যময় চরিত্র। কখনো পরিবারের বড় কর্তা আবার কখনো নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। এরমাঝে অভিনয় করেছেন একেবারেই ভিন্ন কিছু চরিত্রে। বয়সকে জয় করে এসব চরিত্রে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন খুব সহজেই। অমিতাভ বচ্চনের ৭৫তম জন্মদিনে তার অভিনীত তেমন পাঁচ ভিন্ন ধরণের ছবির খবর দিচ্ছেন নুসরাত শারমিন-
ব্ল্যাক
২০০৫ সালে সঞ্জয় লীলা বানসালির পরিচালনায় মুক্তি পায় ‘ব্ল্যাক’ ছবিটি। ভিন্ন ধারার এই ছবিতে অমিতাভ বচ্চন আর রাণী মুখার্জি অভিনয় করেছিলেন দুজন শারীরিক আর মানসিক ভাবে চ্যালেঞ্জড মানুষের চরিত্রে। হেলেন কেলারের জীবনী অবলম্বনে তৈরি হয়েছিল ব্ল্যাক। হেলেন কেলারের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন রানি মুখোপাধ্যায়। সেখানে তাঁর নাম হয়েছিল মিশেল। তাঁর শিক্ষকের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন অমিতাভ। তাঁর নাম ছিল দেবরাজ সহায়। এই ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য দ্বিতীয়বার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন অমিতাভ।
পা
২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পা’ ছবিতে ৬৮ বছর বয়সী অমিতাভ বচ্চন এক তেরো বছরের কিশোরের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। যেই কিশোর এক দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত। মাত্র বারো বছর বয়সেই সেই কিশোরের দেহে বার্দ্ধক্যের লক্ষণ দেখা দেয়। বারো বছরের কিশোরটির শারীরিক অবস্থা হয়ে যায় আশি বছর বয়সের বৃদ্ধের মতো। রোগের নাম প্লেগোরিয়া। অমিতাভ বচ্চন এই রোগে আক্রান্ত সেই কিশোরের মানসিক এবং শারীরিক কষ্টগুলো ফুটিয়ে তুলেছেন তার সুনিপুণ অভিনয়ের মাধ্যমে।
পিকু
২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সুজিত সরকারের ‘পিকু’ ছবিতে বাঙালি পরিবারের বাবা-মেয়ের চরিত্রে দেখা গেছে অমিতাভ বচ্চন ও দীপিকা পাড়ুকনকে। বাবা-মেয়ের সম্পর্কটাকেই খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ছবির গল্পতে। ছবির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন ইরফান খান। অমিতাভ বচ্চনকে বাবার চরিত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য ও বয়সজনিত সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়। মেয়ে দীপিকা বাবার এই সমস্যাগুলো দায়িত্বশীল মেয়ের মতো সামলে নিয়েছেন। এই ছবিতে অমিতাভে অভিনয় মন কেড়ে নিয়েছে সবার। পিকু ছবিতে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন তিনি।
পিংক
‘পিকু’র পরে সুজিত সরকারের ২০১৬ সালের সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার ছবি ‘পিংক’তেও অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন অমিতাভ বচ্চন। ছবিটিতে একজন বাইপোলার ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত এক মানসিক রোগীর চরিত্রে দেখা যায় অমিতাভকে। যিনি পেশায় একজন উকিল এবং মামলা লড়ছেন তিনজন কর্মজীবী নারীর পক্ষে। ছবিতে তিন তরুণীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তাপসি পান্নু, কীর্তি কুলহারি ও আন্দ্রেয়া তারিং।
টিন
অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘টিন’ ছবিটি তেমন ব্যবসাসফল হয়নি। কিন্তু তিনি প্রশংসা কুড়িয়েছেন তার অসাধারণ অভিনয়ের মাধ্যমে। ছবিতে নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকি এবং বিদ্যা বালানও আছেন। ২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া পরিচালক ঋভু দাশ গুপ্ত’র এই থ্রিলার ছবিটি দক্ষিণ কোরিয়ার ছবি ‘মন্টেজ’ এর রিমেক। ছবিতে অমিতাভ অভিনয় করেছেন ‘জন বিশ্বাস’ নামের ৭০ বছর বয়সী এক ব্যক্তির চরিত্রে যে আট বছর আগে খুন হওয়া নাতনির অপহরণকারী এবং খুনির খোঁজে মরিয়া হয়ে ওঠেন।