Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

৩ দফা দাবিতে শিক্ষামন্ত্রীকে ৩৫তম বিসিএস ক্যাডারদের স্মারকলিপি

শিক্ষা ক্যাডারে আত্তীকরণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে ৩ দফা দাবিতে শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন ৩৫তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের সদস্যরা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন ক্যাডার কর্মকর্তাদের পক্ষে ৩৫তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা, পদার্থবিজ্ঞান) ক্যাডারে চতুর্থ স্থান অধিকারী দেব দুলাল গুহ নিপুণ এবং মাহফুজুর রহমান খান (প্রভাষক, ব্যবস্থাপনা)।

জানা যায়, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত গেজেটের স্মারক নং ৩৭.০০.০০০০.০০৬৭.০৬.০০২.২০১৪ (অংশ)-৯১৩-শিক্ষা এর মাধ্যমে ৬৮ জন প্রদর্শককে প্রভাষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু শিক্ষা ভবনের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, একই বছর নিয়োগ হলেও সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্তদের চেয়ে পদোন্নতিপ্রাপ্তরা সিনিয়রিটি পান।

৩৫তম বিসিএস ক্যাডাররা বলছেন, প্রদর্শকদের পদোন্নতির গেজেট প্রকাশিত হয় গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর, আর ৩৫তম বিসিএসের গেজেট হয় একই বছরের ২ এপ্রিল। কাজেই, এই বিধি অনুযায়ী প্রায় ৯ মাস পরে নিয়োগ পেয়েও বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে আসা ক্যাডার কর্মকর্তাদের চেয়ে পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রদর্শকরা সিনিয়র হবেন বলে জানা গেছে। মাত্র ৫ দিন পর গেজেট হলেই পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রদর্শকরা ক্যাডারদের জুনিয়র হতেন।

এই তাড়াহুড়োকে অনেকেই সন্দেহের চোখে দেখছেন, বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে নতুন করে দানা বেঁধেছে অসন্তোষ। তবে ২৬ ডিসেম্বরের গেজেটে পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রদর্শকদেরকে শুধু প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ প্রদানের কথা বলা আছে, ‘বিসিএস ক্যাডার’ হিসেবে নিয়োগ প্রদানের কথাটি উল্লেখ নেই। সেক্ষেত্রে বিষয়টি পরিষ্কার করার দাবি করেছেন তারা।

তাদের দাবি, শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা শুধু শিক্ষক নন, তারা লাখো গ্র্যাজুয়েটকে পিছে ফেলে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের কয়েক ধাপের বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উঠে আসা রাষ্ট্রের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা, যাকে সরকার চাইলে যেকোন সময় সরকারের যেকোন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বসাতে পারেন। বিসিএস দেয়ার ন্যূনতম যোগ্যতা যেখানে স্নাতক, সেখানে ডিগ্রি পাশ করেও হওয়া যায় ল্যাব প্রদর্শক। এই প্রদর্শকেরাই কয়েক বছর পর উচ্চতর সনদ জমা দিয়ে পদোন্নতি পেয়ে হয়ে যান প্রভাষক, লিখতে পারেন তারাও বিসিএস ক্যাডার! আগে প্রদর্শক থেকে ২ শতাংশ প্রভাষক হতেন, পরে এটি বাড়িয়ে প্রথমে ৪ এবং পরে ১০ এ উন্নীত করা হয়। বিসিএস ক্যাডারদের প্রশ্ন, এরা স্ব স্ব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কি?

৩৫তম বিসিএস (শিক্ষা) ক্যাডারদের দাবিসমূহ হলো:

১) শিক্ষা ক্যাডারে নতুন করে সকল ধরণের আত্তীকরণ অনতিবিলম্বে বন্ধ ও বাতিল করা।

২) সদ্য পদোন্নতি পেয়ে প্রদর্শক থেকে প্রভাষক হওয়া শিক্ষকদেরকে ক্যাডার সার্ভিসের বাইরে রাখা। সেক্ষেত্রে তারা কোনোক্রমেই আমাদের সিনিয়র হবেন না।
৩) বিসিএস দিয়ে ক্যাডার হয়ে আসা নবীন শিক্ষকদের উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধা ও মর্যাদাপ্রাপ্তি এবং সঠিক সময়ে পদোন্নতির বিষয়টি নিশ্চিত করা।

কিছুদিন আগেও প্রায় ২৮৩ টি সরকারি কলেজকে আত্তীকরণের আওতায় আনা নিয়ে লাগাতার আন্দোলন ও পত্রিকায় লেখালেখির মাথায় বেসরকারি কলেজের শিক্ষকদের জন্য আলাদা নীতিমালা গঠন করে তাদেরকে ক্যাডার সার্ভিসের বাইরে রাখার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। এর রেশ কাটতে না কাটতেই এবার কয়েক গ্রেড নিচের প্রদর্শকরা পদোন্নতি পেয়ে সিনিয়র হয়ে যাওয়ার বিষয়টি মোটেই মানতে পারছেন না শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা।

৩৫তম বিসিএস (শিক্ষা) ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পক্ষে পদার্থবিজ্ঞানের প্রভাষক দেব দুলাল গুহ নিপুণ বলেন: এখন থেকে ক্যাডার সার্ভিসে আসতে হলে শুধু বিসিএস দিয়েই আসতে হবে। এর বাইরে সকল ধরণের পার্শ্বপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে। বেসরকারি কলেজ শিক্ষক এবং প্রদর্শকদের প্রতি সম্মান রেখেই আমরা আমাদের ন্যায্য দাবি পেশ করেছি। আশা করছি, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী আমাদের দাবির ন্যায্যতা বুঝে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আত্তীকরণ রোধে আশু ব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে সকল ধরণের পার্শ্বপ্রবেশ বন্ধে উদ্যোগী হবেন।

Exit mobile version