প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আজ সংসদে বলেছেন, সরকার ইতোমধ্যে সব মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার উদ্যোগের অংশ হিসেবে ২৪ কোটি ৫৪ লাখ ৫২ হাজার ৭০০ ডোজ ভ্যাকসিন সংগ্রহের ব্যবস্থা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা এদিন একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের লিখিত প্রশ্নের জবাবে সংসদকে এ তথ্য জানান।
প্রশ্নোত্তর পর্বটি টেবিলে উত্থাপিত হয়। এর আগে বিকেল ৫টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৪ কোটি ৫৪ লাখ ৫২ হাজার ৭০০ ডোজ ভ্যাকসিন সংগ্রহের ব্যবস্থার পাশাপাশি দেশে দেশে ৩০ আগস্ট ২০২১ পর্যন্ত মজুদ ভ্যাকসিনের পরিমাণ এক কোটি ১৮ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৩ ডোজ।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পরপরই সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রদানের বিষয়টিকে তার সরকার অগ্রাধিকার প্রদান করে।
এ লক্ষ্যে করোনা টিকা আবিষ্কার ও ব্যবহারের অনুমতি প্রাপ্তির পূর্ব থেকেই সরকার ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও ভ্যাকসিন প্রদানের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের সব উৎপাদনকারী সংস্থার সঙ্গেই আমরা যোগাযোগ স্থাপন করেছি, এর মধ্যে কেবল ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে সাড়া পাই এবং অগ্রিম টাকা দিয়ে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করি।
কিন্তু অন্যান্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে ভ্যাকসিন প্রাপ্তির কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে কেবল চীনের সিনোফার্ম এবং রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি থেকে সাড়া পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ভ্যাকসিন সংগ্রহের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করি। এর মধ্যে সিনেফার্মের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের জন্য সমঝোতা চুক্তিও সই হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতি মাসে যাতে এক কোটি ডোজের বেশি ভ্যাকসিন পাওয়া যায় তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছ। সিনেফার্ম থেকে প্রদত্ত সিডিউল অনুযায়ী আগামী অক্টোবর মাস থেকে প্রতি মাসে ২ কোটি হিসাবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ছয় কোটি ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলমান ভ্যাকসিন কার্যক্রম জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সব বিভাগীয় সদর, জেলা সদর ও উপজেলা সদরে অবস্থিত ৬৭৩টি টিকা কেন্দ্রের মাধ্যমে জনগণকে ভ্যাকসিন প্রদান করা হচ্ছে। টিকা প্রদান কেন্দ্র ইউনিয়ন পর্যায়ে বিস্তৃত করা হয়েছে। ভ্যাকসিন প্রদানে প্রয়োজনীয় জনবলকেও ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত ৭ আগস্ট ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন চলাকালে একদিনে ৩০ লাখ ৯১ হাজার ৬৩২ ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে। এ পর্যন্ত (৩০ আগস্ট) মোট দুই কোটি ৬১ লাখ ২৯ হাজার ১৮৭ ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে। যার মধ্যে প্রথম ডোজ পেয়েছে এক কোটি ৮২ লাখ ৮৯ হাজার ১৮ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে ৭৮ লাখ ৪০ হাজার ১৬৯ জন।
তিনি বলেন, ৩০ আগস্ট পর্যন্ত মজুত ভ্যাকসিনের পরিমাণ ১ কোটি ১৮ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৩ ডোজ। করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও বিনামূল্যে ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।