কক্সবাজারের রামুর উপজেলায় বাঁকখালি নদীর পাড়ের বাসিন্দা কালো বিবি (৭৫) ভালো নেই। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নদীতে মাছ নেই, আর তাই প্রায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এই বিধবা।
অথচ তিন বছর আগেও এ নদী থেকেই মাছ ধরে সাত সন্তানের জননীর আয় রোজগার মন্দ ছিলো না। এই এলাকার অন্যান্য জেলে সম্প্রদায়ের মানুষেরও দুরবস্থার চিত্র এক।
মৎস্য আহরণের পেশা ছেড়ে কালো বিবির সন্তানের মতো স্থানীয় অনেকেই এখন অন্য পেশায় নিয়োজিত হয়েছেন। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইকবাল হারুন জানান, মাছ ধরে সংসার চালাতো এমন নয়শ পরিবার পেশা পরিবর্তন করেছে।
বাঁকখালী নদী ও মোহনা এলাকা থেকে এ পর্যন্ত ৫৭ টি মাছের প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে জানান কক্সবাজার মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এনামুল হক।

তিনি বলেন, আর্সেনিক, কোবল্ট, দস্তার দূষণ ক্রমাগতভাবে নি:সরিত ও নির্গত হয়ে জলজ পরিবেশকে দূষিত করছে। ফলে মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়াসহ অন্যান্য উপকূলীয় ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র ধ্বংস হচ্ছে।
বাঁকখালীতে প্যারাবন ও কিছু দূর্লভ গাছ ছিল যাতে আকড়ে ধরে অনেক জীববৈচিত্র ছিল। কিন্তু এ বন ধ্বংসের ফলে ঐসব জীববৈচিত্র হারিয়ে গেছে। যা আছে তাও পড়েছে হুমকির মুখে। এমনটা জানান পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. আনসারুল করিম।
পুরো কক্সবাজারের জীববৈচিত্র রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন বলে পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম উল্লেখ করেন।
বাঁকখালী নদী রক্ষায় একটি বড় ধরনের প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে জানিয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, ড্রেজিং সহ নানা বিষয় নিয়ে বড় একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে।এ প্রকল্পতে জীববৈচিত্র সংরক্ষনের বিষয়টি রয়েছে।
তবে পরিবেশবিদদের মতে, এ ব্যপারে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ভাবে জন সচেতনতা তৈরি করতে সবাইকে উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলেই এ নদী ও আশপাশের এলাকার জীব-বৈচিত্র রক্ষা করা সম্ভব হবে।