Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

ফল ঘোষণায় নজিরবিহীন অপেক্ষা: সমাধান কোন পথে?

Advertisements

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সম্পাদক পদে ভোট গণনা নিয়ে নজিরবিহীন এক পরিস্থিতিতে থমকে আছে সব পদের ফল ঘোষণা। কোন প্রক্রিয়ায় এর সমাধান আসবে? সেটাই এখন বহু মানুষের প্রশ্ন।

নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মসিউজ্জামান। ভোট গণনার রাতের জটিল পরিস্থিতির মুখে সমিতির বিদায়ী কার্যনির্বাহী কমিটির কাছে পদত্যাগপত্র দেন তিনি।

বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার চ্যানেল আই অনলাইনকে এ ওয়াই মসিউজ্জামান বলেন, ‘এটা তো আমাদের ঘরের ব্যাপার। দু-পক্ষ এ নিয়ে কথা বলতে চাইলে আমি তাদের সাথে কথা বলবো।’

উদ্ভুত পরিস্থিতির সমাধান সম্পর্কে বিএনপি সমর্থিত সম্পাদক পদপ্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘আমি মনে করি নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক অভিমান করে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যকরী কমিটির সবার উপস্থিতিতে মোবাইলে লাউডস্পিকার দিয়ে গত পরশু দিন (রোববার) আমি নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির আহ্বায়কের সাথে কথা বলেছি। এই উদ্ভুত পরিস্থিতির সমাধান উনি করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

তবে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর এমন বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী আবদুন নূর দুলাল চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক এ ওয়াই মসিউজ্জামান নিজেই পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। তাই ওই পদে সে আর নেই। নতুন একজনকে ওই পদে নিয়ে সম্পাদক পদের ভোট ফ্রেশ কাউন্টিং করে ফল ঘোষণা করতে হবে। তাতেই সমস্যার সমাধান হবে।’

গত ১৫ এবং ১৬ মার্চ দুই দিনব্যাপী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হয়। পরেরদিন ১৭ মার্চ বিকেল সাড়ে চারটায় ভোট গণনা শুরু হয়ে চলে মধ্যরাত পর্যন্ত।

গণনায় বিভিন্ন টেবিল থেকে আসা ভোটের অনানুষ্ঠানিক যোগফলে বিএনপি-সমর্থিত নীল প্যানেলের প্রার্থী মো. রুহুল কুদ্দুস (বর্তমান সম্পাদক) কিছুটা এগিয়ে ছিলেন। তবে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সম্পাদক পদে পুনরায় ভোট গণনা চেয়ে নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির আহ্বায়কের কাছে এক পর্যায়ে আবেদন জানান আওয়ামী লীগ-সমর্থিত সাদা প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী আবদুন নূর।

তা নিয়ে মধ্যরাতে হইচই-হট্টগোল শুরু হয়। অনেকেই সেই সময় নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির আহ্বায়কের পদত্যাগ চান। সেই সাথে উপস্থিত কয়েকজন আপত্তিকর কথা বলার পাশাপাশি অসৌজন্যমূলক আচরণও করেন।

সেই রাতের প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন আইনজীবী এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘সমিতির দক্ষিণ হলে তখন অনেকটা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক এ ওয়াই মসিউজ্জামান ও উপ-কমিটির অন্য সদস্যরা।’

এক পর্যায়ে রাত সাড়ে তিনটার দিকে ভোট গণনার স্থান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে এ ওয়াই মসিউজ্জামান জানান সম্পাদক পদে পুনরায় ভোট গণনা চেয়ে করা আবেদন দুই পক্ষের উপস্থিতিতে ১৮ মার্চ বেলা তিনটায় নিষ্পত্তি করা হবে।

কিন্তু নির্ধারিত ১৮ মার্চ এ ওয়াই মসিউজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান, ‘স্বাস্থ্যগত কারণে ১৭ মার্চ রাত ১টায় সমিতির বিদায়ী কার্যনির্বাহী কমিটির কাছে আমি পদত্যাগপত্র দিয়ে দিয়েছি।’

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এবারের নির্বাচনে কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪টি পদের মধ্যে সভাপতি, সহ-সভাপতির দুটি এবং সদস্যের তিনটি পদসহ মোট ছয়টি পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত (সাদা প্যানেল) প্রার্থীরা ভোটের যোগফলে এগিয়ে ছিলেন।

সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, সহ-সম্পাদকের দুটি এবং সদস্যের চারটি পদসহ মোট আটটি পদে বিএনপি সমর্থিত (নীল প্যানেল) প্রার্থীরা এগিয়ে ছিলেন। তবে সম্পাদক পদে ভোট গণনা নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কোনো পদের ফলাফলই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা হয়নি।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২২-২৩ মেয়াদের নির্বাচনে কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪টি পদের বিপরীতে প্রার্থী ছিলেন ৩৩ জন। আর মোট ভোটার ছিল ৮ হাজার ৬২৩ জন। সিনিয়র আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের নির্বাচনী সাব-কমিটি (নির্বাচন কমিশন) এবারের নির্বাচন পরিচালনা করেন।

Exit mobile version