ইটালি থেকে রাশিয়ার সার্কাসের জন্য পাচার হওয়ার সময় আটক করা অসহায় ও ক্ষুধার্ত ৯টি বাঘ এখন পোলিশ চিড়িয়াখানায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে।
একটি লরিতে করে ছোট খাঁচায় বাঘগুলিকে এমনভাবে অযত্নে ও অবহেলায় রাখা হয়েছিল যে তাদের মৃত্যু প্রায় আসন্ন ছিলো। বাঘগুলি নিজেদের মলমূত্রের মধ্যেই আটকে ছিলো বেশ কয়েকদিন। মলমূত্রে পশমগুলো আটকে যায়। বাঘগুলো পানিশূণ্য ও ক্ষুধার্ত ছিলো। এমন অবস্থায় বেলারুশ সীমান্তেও আটকে ছিলো বেশ কয়েকদিন।
ডেইলি মেইল জানায়, ২২ অক্টোবর বাঘগুলিকে একটি অসহ্য ও ভয়াবহ যাত্রা করতে হয়েছিলো, এই যন্ত্রণাদায়ক যাত্রা পথে বিড়াল প্রজাতির দশম বাঘটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
তবে সুখবর হলো ৯টি বাঘের ৭টি বাঘ পশ্চিম পোল্যান্ডের পোজন্যান চিড়িয়াখানায় এখন স্বাভাবিক খাবার খাচ্ছে। তারা ভিটামিন ও খনিজ লবণ গ্রহণ করছে। গরুর ও ঘোড়ার মাংসও দেওয়া হয়েছে তাদের।
চিড়িয়াখানার কর্মীরা বলছেন যে, তিনটি পুরুষ এবং চারটি মেয়ে প্রজাতির বাঘ। এখনও তারা ভয়ংকর যাত্রার মানসিক চাপে আছে কিছুটা। তবে তারা গরু এবং ঘোড়ার মাংসের পাঁচ থেকে ছয় কিলো খাচ্ছে। যা তাদের নিয়মিত খাবারের তুলনায় নগণ্য।
তারা বলছেন যে, প্রাণীগুলি কয়েকদিন খাবারহীন থেকে অসহায় হয়ে পড়েছিলো, এই অবস্থায় তাদের শক্তি বৃদ্ধিতে নিয়মিত খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে।
৯টি বাঘের মধ্যে দুটি বাঘ অন্য চিড়িয়াখানায় আছে, তাদের অবস্থা তুলনামূলক ভালো বলে জানা গেছে।
পোলিশ কর্তৃপক্ষ জানায়, গত সপ্তাহে তারা দুজন ইতালীয় ট্রাক চালককে অভিযুক্ত করেছে। তারা যাত্রাটি করেছিলো পশু নির্যাতনের মাধ্যমে।
বাঘগুলির মালিক কে, সেটি এখনো স্পষ্ট নয়। তবে রোমের একটি প্রজনন কেন্দ্রের প্রধান বা দাগেস্তান চিড়িয়াখানার মালিকরা যা তাদের উপহার হিসাবে গ্রহণ করেছিলো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পোজম্যান চিড়িয়াখানার বর্ণনা মতে, বাঘগুলিকে যখন পাওয়া যায় তখন এমন অবস্থা ছিলো যে, তারা বাঁচার অবস্থায় ছিলো না। তাদের নিজেদের মলমূত্র দ্বারা তাদের পশম আটকে ছিলো। প্রস্রাব জ্বলায় তারা মানসিক চাপের মধ্যে ভয়াবহ অবস্থা ছিলো।
পোজন্যান চিড়িয়াখানার একজন মুখপাত্র বলেছেন যে, শেষ পযন্ত বাঘগুলিকে স্পেনে ডাস সংস্থা অ্যানিমাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড প্রোটেকশন পরিচালিত একটি বিশেষ সুবিধায় স্থানান্তর করা হবে।
প্রাণী অধিকার সংস্থার মতে, সারা বিশ্ব জুড়ে মাত্র ৩,২০০ থেকে ৩,৯০০ টি বাঘ বনে বসবাস করে।
আরও ৭০০০ হাজার বাঘ বন্দি, যার অধিকাংশই এশিয়ায়।