চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

সাগরে বড় সাইজের প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে

চলতি ইলিশের মৌসুমে জেলেদের জালে বেশ বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়ছে। বরগুনার আড়তদার, ট্রলার মালিক ও ট্রলার মালিক সমিতিকে সাগরে মাছ ধরারত জেলেরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সুখবর জানাচ্ছেন। 

সাগরে ঝড়-বাদল যদি না থাকে তাহলে এ বছর ইলিশ ধরার রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। জেলেরা জানান, প্রতিটি ট্রলারে ৮০০ গ্রাম থেকে পৌনে দুই কেজি ওজনের প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও স্থানীয় বাজারে বড় সাইজের ইলিশ মাছ পাওয়া যাবে।

Bkash July

বরগুনা জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, দেশের উৎপাদিত মোট ইলিশের ১৩% বরগুনা জেলায় আহরণ করা হয়। গত অর্থবছরে এ জেলায় প্রায় ১ লাখ ২০ টন ইলিশের আহরণ ছিলো। বরগুনার পাথরঘাটায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইলিশ মৎস্য বন্দর এবং এখানে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটিও (বিএফডিসি) অবস্থিত। ইলিশ মৌসুমে এ অবতরণ কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে দুইশ’ টন রূপালি ইলিশ বেচা-কেনা হয়।

গত দুই দিনে বিএফডিসি পাইকারি মাছ বাজারে যে ট্রলারগুলো এসেছে সেগুলোর জেলেরা ৮০০ গ্রাম থেকে পৌনে দুই কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি করেছে। তবে দামটা ছিল খুব চড়া। এক কেজি ওজনের ওপরের ইলিশের মণ ছিল ৪৬ হাজার টাকা এবং এক কেজি ওজনের নিচের ইলিশের মণ ৩৪ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। প্রতিটি ট্রলারই ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকার ইলিশ বিক্রি করেছে জানালেন, পাথরঘাটা বিএফডিসি পাইকারি মাছ বাজারের মার্কেটিং অফিসার মো. অলিউল্লাহ। তিনি আরও জানান, গত এক সপ্তাহে এই বাজারে নদী ও সাগরের ৯১ হাজার ৭২৪ মণ ইলিশ মাছ বিক্রি হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। সাগরে ঝড়-বাদল যদি না থাকে তাহলে এ বছর ইলিশের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।

Reneta June

নদীগুলোতে কম সংখ্যক হলেও বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়ছে। ইলিশের আকার বড় হওয়ায় স্থানীয় বাজারে দামও খুব চড়া। এ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার দ’শ টাকা দরে আর তার চেয়ে একটু বেশি ওজন হলেই তা বেড়ে দেড় হাজার টাকায় উঠে যাচ্ছে বলে ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান। পাথরঘাটায় অতি সম্প্রতি ২ কেজি ৭০০ গ্রাম ওজনের একটি ইলিশ মাছ বেচাকেনা হয়েছে পাঁচ হাজার ৯০০ টাকায়।

পাথরঘাটা বিএফডিসি পাইকারি মৎস্য বাজারের বাবুরাম কর্মকার জানান, এ বছর ইলিশ মৌসুমের প্রথমেই ইলিশ মাছ শিকারের ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা পালন করেছেন জেলেরা। নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ২৩ জুলাই জেলেরা সাগরে গিয়ে ইলিশ মাছ ধরা শুরু করেন। প্রতিটি ট্রলারে কমবেশি সবারই জালে ইলিশ ধরা পড়েছে। বিএফডিসি পাইকারি মাছ বাজারে ৯৯ জন আড়তদার। সবাই ট্রলার মালিকদের কমবেশি দাদন দিয়ে ট্রলার সাগরে পাঠিয়েছেন। পাথরঘাটা বিএফডিসি আড়তদার সমিতির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মো. মারুফ হোসেন জানান, সাগরে ৬৫ দিন ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ থাকায় মাছের সাইজ বড় হয়ে গেছে এবং মাছগুলো কিনারের দিকে এসেছে। এখন মাছের যে চড়া দাম তা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সরকারি নিষেধাজ্ঞায় প্রতিবছর ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ শিকার বন্ধ থাকে। আবার ৩০ জুন পর্যন্ত আট মাসের বেশি সময় ধরে জাটকা ধরা, বিক্রি, পরিবহণ নিষিদ্ধ থাকে। এরমধ্যে গতবছর থেকে সাগরে ২০ মে হতে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ২৪ জুলাই থেকে ১১ অক্টোবর তিন মাস এবং ৩ নভেম্বর থেকে ১৯ মে পর্যন্ত জেলেরা ইলিশ ধরতে পারবে। সরকারি বিধি নিষেধের সাথে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে লকডাউনে কর্মবিরতি এবং ফলশ্রুতিতে দূষণমুক্ত হয়েছে নদীর পানি। প্রতিকূল অবস্থায় বরাবরের মতো নদীতে জেলেদের জালও পড়েনি খুব একটা। সেই সাথে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে নদীগুলো থেকেছে কানায় কানায় পূর্ণ। জেলেরা আগের চেয়ে অনেক সচেতন হয়েছে। সব মিলিয়ে এ মৌসুমে সার্বিক পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুকূলে থাকবে; ব্যাপক ইলিশ আহরণে বলে ইলিশের জেলা বরগুনার জেলে, ব্যবসায়ী, সাধারন ক্রেতা, মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা আশা করছেন।

বেকার সময়ে সরকার যেভাবে জেলেদের সহায়তা দিয়ে আসছে সে কারনে জেলেদের মধ্যে অবৈধ মাছ শিকারের প্রবনতা একেবারেই কমে এসেছে। ইলিশের বাম্পার উৎপাদনের আশায় রয়েছি।

Labaid
BSH
Bellow Post-Green View